
ফাইল ছবি
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বহুল আলোচিত অর্থপাচার ইস্যুতে পশ্চিমা সহায়তা চাওয়া হলেও যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এখনো তা নিয়ে প্রকাশ্যে এগিয়ে আসেনি। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধ সত্ত্বেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। এই অবস্থান শুধু সৌজন্যবোধের প্রশ্ন নয় এটি দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের জটিলতা ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির বাস্তবতাকেও সামনে আনছে।
ইউনূস ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে পাচার হওয়া অর্থের একটি বড় অংশ যুক্তরাজ্যে আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এটি শুধুই আইনি বিষয় নয়, বরং যুক্তরাজ্যের জন্য একটি নৈতিক দায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিশ্লেষকদের মতে, স্টারমারের এই নীরবতা যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিবেচনার ফল। কারণ, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে স্টারমার নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টির কিছু সদস্যের, যার অন্যতম উদাহরণ তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি শেখ হাসিনার ভাগনি এবং সদ্য পদত্যাগ করা ‘সিটি মিনিস্টার’।
টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে সম্পদ গ্রহণ করেছেন, যদিও তিনি তা অস্বীকার করেছেন। এই প্রেক্ষাপটে ইউনূসের সঙ্গে তার সাক্ষাতের আগ্রহ প্রকাশ এবং ইউনূসের তা প্রত্যাখ্যান এক ধরনের রাজনৈতিক বার্তা বহন করছে।
যুক্তরাজ্য একদিকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত দিতে ‘আইনি সহায়তা’ দিচ্ছে বলে দাবি করা হলেও, অন্যদিকে রাজনৈতিক নেতৃত্বের নীরবতা দ্বৈত অবস্থান স্পষ্ট করে তুলছে। ইউনূসের মতে, শুধুমাত্র সহযোগিতার আশ্বাস যথেষ্ট নয় আইনি ও নৈতিকভাবে আরও সক্রিয় ভূমিকা জরুরি।
তিনি বলেছেন, ‘এই অর্থ চুরি করা। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলার প্রশ্নও বটে।’
ইউনূসের লন্ডন সফর শুধু যুক্তরাজ্যকেন্দ্রিক নয়। এটি একটি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মিশনের শুরু, যার লক্ষ্য কানাডা, সিঙ্গাপুর, ক্যারিবিয়ান অঞ্চল ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনা। তবে তার এই প্রচেষ্টা কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নির্ভর করছে পশ্চিমা দেশগুলোর রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর।
ইউ