ঢাকা,

১৪ জুন ২০২৫


রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে হামলা, জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চায় ভারত

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ০৯:৪০, ১৩ জুন ২০২৫

রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে হামলা, জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চায় ভারত

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কাছারিবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল। হামলার ঘটনাকে ‘জঘন্য’ আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দা জানান মুখপাত্র।

এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে, সে জন্য কড়া ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে তিনি এই কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। এটি নোবেলজয়ী এই কবির স্মৃতি, দর্শন ও উত্তরাধিকারকে অপমান করার সামিল। ওই হিংসাত্মক ঘটনা গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্তর্ভুক্তিমূলক দর্শন ও শিক্ষার পরিপন্থি। কবিগুরু সেই দর্শনের কথাই বারবার বলে এসেছেন।

dhakapost

রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ‘উগ্রপন্থিরা’ বাংলাদেশের সহনশীলতা ও সমন্বয়মূলক সংস্কৃতির প্রতীকগুলো যেভাবে পরিকল্পিত উপায়ে ধ্বংস করে চলেছে, এই আক্রমণ তারই অংশ। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত, এই ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া, যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে না পারে।

এদিকে এ হামলার ঘটনায় ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনেও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিজেপির মুখপাত্র ও সাংসদ সম্বিৎ পাত্র বলেন, এটি ভারতের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ওপর সরাসরি আঘাত। রবীন্দ্রনাথ কেবল বাংলা নয়, ভারতের আত্মার প্রতীক। তিনি দাবি করেন, এ হামলার পেছনে জামায়াতে ইসলামি ও হেফাজতে ইসলামের মতো কট্টরপন্থী গোষ্ঠীর ভূমিকা রয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১০ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে দর্শনার্থীকে আটকে মারধর করায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা কাছারিবাড়ির অডিটরিয়াম ও কাস্টডিয়ানের অফিসকক্ষের দরজা-জানালা ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

dhakapost

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঈদের দ্বিতীয় দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে স্থানীয় রূপপুর মহল্লার প্রবাসী শাহনেওয়াজ হোসেন ও স্ত্রী সুইটি খাতুন টিকিট না কেটে জোর করে কাছারিবাড়িতে প্রবেশ করেন।

পরে দায়িত্বরত স্টাফদের সঙ্গে শাহনেওয়াজের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কাস্টডিয়ান হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে শাহনেওয়াজকে আটকে মারধর করেন তারা। পরে ভুক্তভোগী দর্শনার্থী শাহনেওয়াজ কাস্টডিয়ান হাবিবুর রহমান, কর্মচারী শরিফুজ্জামান সরকার, সিরাজুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, মুজিবুর রহমান ও আব্দুল মমিনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু অভিযোগ দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় সকালে শাহনেওয়াজের নেতৃত্বে শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

এতে বক্তারা রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির কর্মচারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। কিন্তু এ কর্মসূচি শেষে ৫০-৬০ বিক্ষুব্ধ জনতা কাস্টডিয়ানের অফিস কক্ষ ও অডিটরিয়ামের দরজা-জানালা ভাঙচুর করে চলে যায়।

টিএইচ

News