ঢাকা,

০৯ মে ২০২৫


ছয় ঘণ্টায়ও প্রধান উপদেষ্টার সাড়া পাননি আন্দোলনকারীরা

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ০৪:১৭, ৯ মে ২০২৫

ছয় ঘণ্টায়ও প্রধান উপদেষ্টার সাড়া পাননি আন্দোলনকারীরা

সংগৃহীত ছবি

আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের ছয় ঘণ্টা পার হলেও এখনো প্রধান উপদেষ্টার সাড়া পাননি তারা।

বৃহস্পতিবার (৮ মে)  রাত দশটা থেকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। রাত ২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে জাতীয় নাগরিক পার্টি, জুলাই ঐক্য, শিবির, আপ বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী, ইনকিলাব মঞ্চ, ছাত্র পক্ষের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন উপস্থিত হচ্ছেন। ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে মিছিল।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশ-র‍্যাব অবস্থান নিয়েছে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান করছেন। তারা নানা স্লোগান দিচ্ছেন। তারা 'ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামীলীগ নো মোর', খুনি লীগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে, ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা', ‘ব্যান করো, ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’, ‘দিল্লি না, ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘গোলামি না আজাদী, আজাদী আজাদী’ ‘নাহিদ, আক্তার আসছে, রাজপথ কাঁপছে’, ‘একটা একটা ছাত্রলীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও, ঘুরিয়ে দাও’, ‘২৪ বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’, প্রভৃতি বলে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এই কর্মসূচির কারণে যমুনার সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

তবে যতক্ষণ না পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত যমুনার সামনে থেকে কেউ ওঠবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, জুলাইয়ের পক্ষের সব শক্তি, আমরা এই জীবনটাকে বাংলাদেশের জন্য দিয়েছিলাম। আমাদের মধ্য মত পার্থক্য থাকবে, কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ। যতক্ষণ না পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে এখানে থাকবো।

কর্মসূচিতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, আপ বাংলাদেশের আলী আহসান জুনায়েদ, রাফে সালমান রিফাত, মোহাম্মদ হিযবুল্লাহ, শিবিরের দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের শরীফ ওসমান হাদিসহ কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।

এই ছাড়া এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনীম জারা, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন, নুসরাত তাবাসসুম, তাজনূভা জাবীন, সারোয়ার তুষার অংশ নিয়েছেন। ছাত্রসংগঠনের মধ্যে সমন্বয়ক আব্দুল কাদের, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সদস্যসচিব জাহিদ আহসান, জুলাই ঐক্যের এবি জুবায়ের, মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ প্রমুখ উপস্থিত আছেন।

কর্মসূচিতে এনসিপির যুব উইংয়ের প্রধান তারিকুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘ সময় এখানে অপেক্ষা করবো। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আগে আমরা যমুনার সামনে থেকে যাচ্ছি না।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে ইন্টেরিমকে আর সময় দিতে রাজি নই, লাশ হয়ে ফিরবো না হয় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

কর্মসূচিতে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, নয় মাস কেটে গেছে দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম নেই। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা পালিয়ে যাচ্ছে। আমরা দেখেছি- বিচার না করে ছয়শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাদের পালিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে। এজন্য আমরা দাবি জানিয়েছি, আওয়ামীলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।

এর আগে এদিন রাত ১০টা থেকে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এদিন রাত ১০টায় যমুনার সামনে উপস্থিত হন হাসনাত আব্দুল্লাহ। এরপর থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিল নিয়ে সেখানে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। এনসিপি ছাড়াও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতকার্মীরা সেখানে অবস্থান নেন।

টিএইচ

News