যুক্তরাষ্ট্রের ইরান হামলার আঁচ বাংলাদেশেও, শেয়ারবাজারে ধস

যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারেও। রবিবার (২২ জুন) দিনের লেনদেনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমে গেছে। সূচক পড়েছে বড় আকারে, দেখা দিয়েছে লেনদেন খরাও।

যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে ১৩ হাজার কেজি ওজনের জিবিইউ-৫৭ ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর বোমা হামলা করেছে। এ হামলার খবর লেনদেন শুরুর আগেই ছড়িয়ে পড়ে বাজারে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে। ফলে দিনের শুরু থেকেই বাড়তে থাকে বিক্রির চাপ।

ডিএসইর এক সদস্য বলেন, “ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র জড়ানোয় পুরো পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে। সেই আতঙ্ক থেকেই বড় দরপতন হয়েছে।”

লেনদেন শেষে দেখা গেছে, ডিএসইতে মাত্র ১৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৩৬৫টির দাম কমেছে এবং ১৬টির কোনো পরিবর্তন হয়নি। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৭৬ পয়েন্ট, এসে দাঁড়িয়েছে ৪,৬৭৭ পয়েন্টে।

ডিএসই শরিয়াহ সূচক কমেছে ২১ পয়েন্ট, আর ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট। দিনভর লেনদেন হয়েছে মাত্র ২৭১ কোটি ৭০ লাখ টাকার, আগের দিনের তুলনায় প্রায় ৩৩ কোটি টাকা কম।

দিনের লেনদেনে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল লাভেলো আইসক্রিম, যার ১৯ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এরপর রয়েছে বিচ হ্যাচারি (৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা) ও ব্র্যাক ব্যাংক (৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা)।

ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ দশে ছিল আরও—স্কয়ার ফার্মা, ফাইন ফুডস, উত্তরা ব্যাংক, এশিয়াটিক ল্যাবস, সিটি ব্যাংক, ওরিয়ন ইনফিউশন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো।

অন্যদিকে চট্টগ্রামের সিএসইতেও একই চিত্র। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৭১ পয়েন্ট। অংশ নেওয়া ২০৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ২৯টির, কমেছে ১৫৩টির, অপরিবর্তিত ২৫টি। লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারের ভিতরে দীর্ঘদিন ধরে চাপ রয়েছে। আর ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা সেটাকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। তবে আতঙ্ক না ছড়ালে বাজার দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলেও মত দিয়েছেন তারা।