
নারীর অদৃশ্য অবদানের স্বীকৃতি: বিবিএস প্রতিবেদনে নারীর অবৈতনিক কাজকে জিডিপির ১৮.৯ শতাংশ সমতুল্য হিসেবে প্রকাশ করায় এমজেএফ-এর অভিনন্দন
নারীর অদৃশ্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেনে বিবিএস প্রতিবেদনে নারীর অবৈতনিক কাজকে জিডিপির ১৮.৯ শতাংশ সমতুল্য হিসেবে প্রকাশ করায় এমজেএফ- অভিনন্দন জানিয়েছে।
বুধবার ( ১০ সেপ্টেম্বর) মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস)-কে , তাদের প্রথম হাউজহোল্ড প্রোডাকশন স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্টস (এইচপিএসএ) প্রতিবেদনে যুগান্তকারী তথ্য প্রকাশের জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছে। উক্ত প্রতিবেদনে অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের অর্থনৈতিক মূল্য ৬ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের জিডিপির ১৮.৯ শতাংশ এর সমান। দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত হলেও এই ফলাফল জাতীয় অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখার মূলভিত্তি হিসেবে থাকা অদৃশ্য শ্রমের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদান করেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে কেবলমাত্র অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের আর্থিক মূল্যই দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ কোটি টাকা, যার সিংহ ভাগ অবদান নারীর – ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। এই তথ্য নারীর অর্থনৈতিক অবদানকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা এতদিন অবমূল্যায়িত ছিল।
এমজেএফ সরকারকে এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার জন্য প্রশংসা জানিয়েছে এবং এই ঐতিহাসিক প্রতিবেদন প্রণয়নে জাতিসংঘ নারী সংস্থা ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক -এর সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
এমজেএফের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম এই প্রতিবেদন প্রকাশকে বাংলাদেশে জেন্ডার সমতার জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত , যেখানে নারীর অস্বীকৃত ও অবমূল্যায়িত গৃহস্থালি কাজ অবশেষে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি যে এটি সমাজে নারী ও কন্যাশিশুদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গৃহস্থালি কাজে নিয়োজিত নারীরা আরও স্বীকৃতি ও সম্মান পাবেন।”
এই ফলাফল এমজেএফ-এর দীর্ঘদিনের "সমতায় মর্যাদা" প্রচারণার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। ২০১৩ সালে শুরু হওয়া এ প্রচারণা নারীর অবদানকে স্বীকৃতি দিতে, পরিবার ও সমাজে তাদের মর্যাদা বাড়াতে, এবং সহিংসতা ও বৈষম্য কমাতে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। বিবিএস জরিপের ফলাফল এমজেএফ ও আরও বহু নাগরিক সংগঠনের বছরের পর বছর ধরে চালানো অক্লান্ত প্রচেষ্টাকে বৈধতা দিয়েছে।
প্রতিবেদনটির সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন করার জন্য এমজেএফ সরকারকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছে । প্রতিষ্ঠানটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কাঠামো গঠন করে অবৈতনিক কাজকে জাতীয় আইন ও নীতিমালার অন্তর্ভুক্তকরণ , যথাযথ বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ এবং অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের জন্য নিয়মিত তথ্য সংগ্রহের উপর জোর দিচ্ছে । এমজেএফ আশা করে, এসব গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ দ্রুত অনুসরণ ও বাস্তবায়িত হবে, যাতে এ তথ্য বাস্তব জীবনে অর্থবহ পরিবর্তন বয়ে আনে।
টিএইচ