ঢাকা,

১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫


টাঙ্গাইলে দ্রুত এগিয়ে চলছে এলজিইডির ১৯ টি প্রকল্প কাজ, অগ্রগতি ৮২ শতাংশ 

সাইফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 

প্রকাশিত হয়েছে: ২৩:০৭, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

টাঙ্গাইলে দ্রুত এগিয়ে চলছে এলজিইডির ১৯ টি প্রকল্প কাজ, অগ্রগতি ৮২ শতাংশ 

টাঙ্গাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের(এলজিইডি) ১৯টি প্রকল্পের অধীনে প্রাক্কলিত মূল্য দুই হাজার ৬৭৮ কোটি ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকার বিপরীতে দুই হাজার ২৮৯ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন প্রকল্পের ৮২ শতাংশ গড় হার সম্পন্ন করেছে।

নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান ও সার্বক্ষণিক তদারকির কারণে এ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। 

টাঙ্গাইল এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল এলজিইডির অধীনে ২০২৪-২৪ অর্থ বছরে দুই 
হাজার ৬৭৮ কোটি ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রাক্কলিত মূল্যের বিপরীতে ১৯টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। 

প্রকল্পগুলোর মধ্যে- অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩(আইআরআইডিপি-৩) প্রকল্পে ১৬২ কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৭২টি স্কীমের মধ্যে ১৪৭টির কাজ সম্পন্ন ও ২৫টি স্কীমের কাজ চলমান রয়েছে। গৃহীত প্রকল্পের ৯৪ শতাংশ কাজের ভৌত 
অগ্রগতি সম্পন্ন হয়েছে। 

টাঙ্গাইল জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প তথা টাঙ্গাইল উন্নয়ন প্রকল্প(আইআরআইডিপি-টাঙ্গাইল) প্রকল্পে ৫৩১ কোটি ২৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ৭৩৭টি স্কীম গ্রহন করা হয়। এরমধ্যে ৪৮০টি স্কীমের কাজ সম্পন্ন, ২১৪টি চলমান, ৯টি বাতিল ও ৩৪টি স্কীমের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে কাজের ভৌত অগ্রগতি ৭৯ শতাংশ।

ময়মনসিংহ অঞ্চলে পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প(এমআরআরআইডিপি) খাতে ৫০৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৬৭টি স্কীমের মধ্যে ৩৭৯টির কাজ সম্পন্ন, ৭৯টি চলমান এবং ৯টির দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে উন্নয়ন কজের ভৌত অগ্রগতি ৮৭ শতাংশ। পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ শীর্ষক (সিআইবিআরআর) প্রকল্পে ১১২ কোটি ২৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যয়ে গৃহীত ১৩টি স্কীমের মধ্যে দুইটি সম্পন্ন ৬টি চলমান এবং ৪টি বাতিল ও ১ টি স্কীমের দরপত্র আহŸান করা হয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে ভৌত অগ্রগতি ৫২ শতাংশ। 

গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণ (জিওবিএম) প্রকল্পে ৬২০ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার টাকা ব্যয়ে গৃহীত ৮৬টি স্কীমের মধ্যে ৭০টি সম্পন্ন, চলমান রয়েছে ১৫টি এবং ১টি স্কীমের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে উন্নয়ন কজের ভৌত অগ্রগতি ৮৬ শতাংশ। 

উপজেলা-ইউনিয়ন ও গ্রাম সড়কে অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ (ইউএইচবিপি) প্রকল্পে ৮৪ কোটি ৫২ লাখ ২৯ হাজার টাকা ব্যয়ে গৃহীত ১৮টি স্কীমের মধ্যে ১০টি স্কীম সম্পন্ন, ৭টি চলমান রয়েছে এবং ১টির দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। এ প্রকল্পে ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে উন্নয়ন কাজের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯২ শতাংশ। ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা-ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ (ডিডিআইআরডব্লিউএসপি) প্রকল্পে ১৯০ কোটি ৩৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে। উল্লেখিত ব্যয়ে ৪১টি স্কীম গ্রহণ করা হয়। এরমধ্যে ২২টি স্কীম সম্পন্ন, ১৮টি চলমান এবং ১টি স্কীমের দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে প্রকল্পের ভৌত 
অগ্রগতি ৯০ শতাংশ। ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন (সিএএফডিআরআইআর) প্রকল্পে ১০১ কোটি ১৮ লাখ ৬২ হাজার ব্যয়ে গৃহীত স্কীমের সংখ্যা ৫৮টি। এরমধ্যে ৩৩টির কাজ সম্পন্ন, ২৩টি স্কীমের কাজ চলমান রয়েছে এবং ২টির দরপত্র বাতিল করা 
হয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে উন্নয়ন কাজের ভৌত অগ্রগতি ৭০ শতাংশ। সাপোর্টিং ফর রুরাল ব্রিজেস (এসইউপিআরবি) প্রকল্পে ৯০ কোটি ১৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩৫টি স্কীম গ্রহণ করা হয়।

এরমধ্যে ২২টির কাজ সম্পন্ন, ১২টি স্কীমের কাজ চলমান রয়েছে এবং ১টির দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে উন্নয়ন কাজের ভৌত অগ্রগতির হার ৮৭ শতাংশ। সার্বজনীন সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়ন (জিএসআইডি-২) প্রকল্পে ২১ কোটি ২৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে গৃহীত ৬৪১টি স্কীমের মধ্যে ৫৩২টির কাজ সম্পন্ন, ৬৭টি স্কীমের কাজ চলমান রয়েছে এবং ৪২টি স্কীমের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে উন্নয়ন কাজের ভৌত 
অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। গ্রাম সড়ক পুনর্বাসন (ভিআরআরপি) প্রকল্পে ১০২ কোটি ৪২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৮০টি স্কীম গ্রহণ করা হয়। এরমধ্যে সবগুলো স্কীমের উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে উন্নয়ন কাজের ভৌত অগ্রগতির হার ১০০ শতাংশ। দেশব্যাপী গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (সিআরএমআইডিপি) প্রকল্পে ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ 
টাকা ব্যয়ে গৃহীত ১৬টি স্কীমের মধ্যে ১২টির কাজ সম্পন্ন, ৩টির কাজ চলমান রয়েছে এবং ১টির দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে উন্নয়ন কাজের ভৌত অগ্রগতি ৯৫ শতাংশ। সারাদেশে পুকুর-খাল উন্নয়ন (আইপিসিপি) প্রকল্পে ৫ কোটি ৮৮ লাখ ৫৮ হাজার টাকা ব্যয়ে 
গৃহীত ২৮টি স্কীমের মধ্যে ১৭টি সম্পন্ন, ৭টি স্কীম চলমান রয়েছে, ৩টির দরপত্র আ করা হয়েছে এবং ১টি স্কীম বাতিল করা হয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে উন্নয়ন কজের ভৌত অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প-২য় পর্যায় (এসএসডবিøউআরডিপি-২) প্রকল্পে ১৫ কোটি ৯৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ৮টি স্কীমের মধ্যে ৬টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং ২টির কাজ চলমান রয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে উন্নয়ন কাজের ভৌত অগ্রগতি ৮২ শতাংশ। 

সমবায় মডেল গ্রাম প্রতিষ্ঠা পাইলট (ডিওসি) প্রকল্পে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১টি স্কীম গ্রহন করা হয়। স্কীমটির কাজ চলমান রয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে স্কীমের উন্নয়ন কাজের ভৌতঅগ্রগতি ৬০ শতাংশ। সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা ইউনিট (আইডবিøউআরএম) প্রকল্পে ১৩ 
কোটি ৭৬ হাজার টাকা ব্যয়ে গৃহীত ৮টি স্কীমের মধ্যে ৫টির উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে ও ৩টির কাজ চলমান রয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে উন্নয়ন কাজের ভৌত অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। সমগ্র দেশে শহর ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ (টিইউএলও) প্রকল্পে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে 
৮টি স্কীম গ্রহণ করা হয়। এরমধ্যে ৭টি স্কীমের কাজ চলমান রয়েছে এবং ১টি স্কীমের দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে উন্নয়ন কাজের ভৌত অগ্রগতি ১৭ শতাংশ।

উপজেলা-টাউন ও মৌলিক অবকাঠামো উন্নয়ন (ইউটিএমআইডিপি) প্রকল্পে ৩ কোটি ৫৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা 
ব্যয়ে গৃহীত ৬টি স্কীমের মধ্যে ২টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৪টি স্কীমের কাজ চলমান রয়েছে। 

ব্যয়িত অর্থের বিপরীতে উন্নয়ন কাজের ভৌত অগ্রগতি ৬৭ শতাংশ। এছাড়া পিসিআরবিসিপি প্রকল্পের আওতায় ৩২ কোটি ৯৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় বা চুক্তিমূল্যে টাঙ্গাইল পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য ৩৬ ও ৭২ ইউনিটের ৭তলা বিশিষ্ট দুইটি আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ জায়গা জটিলতার জন্য স্থগিত রয়েছে। 

টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, গত বছরের আগস্টে সরকার পতনের পর তিনি দায়িত্ব নিয়ে প্রতিটি প্রকল্পে স্কীম পরিদর্শন করেছেন। যেসব স্কীমে সমস্য সৃষ্টি হয়েছিল সেগুলোর দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। কোন কোন স্কীমের কাজ ঠিকাদারকে ডেকে এনে 
আলোচনার মাধ্যমে সমস্য সমাধান করেছেন।

তিনি জানান, ইতোমধ্যে জেলার সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় ৯ হাজার ২৫১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে 
বিভিন্ন প্রকার সড়কও নির্মাণ করা হয়েছে। উন্নয়ন কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করতে তিনি সব সময় কঠোর অবস্থান নিয়ে থাকেন।

টিএইচ

News