ঢাকা,

১৪ আগস্ট ২০২৫


ধারাবাহিক মব সন্ত্রাস, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় এইচআরএফবিএর উদ্বেগ

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ২২:১৩, ১৩ আগস্ট ২০২৫

ধারাবাহিক মব সন্ত্রাস, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় এইচআরএফবিএর উদ্বেগ

দেশে মব সন্ত্রাসের ধারাবাহিক ঘটনায়  নিষ্ঠুর ও অমানবিকভাবে নাগরিকের প্রাণহানি ঘটছে। এ ধরনের ঘটনা  শুধু  আইনশৃঙ্খলা বিষয় নয়, বরং এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি ।

বিশেষভাবে রংপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই ব্যক্তিকে গণপিটুনিতে হত্যার আগে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেও ভুক্তভোগীদের রক্ষায় কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে । পরে পুলিশের পক্ষ থেকে  ঘটনাস্থল থেকে শুধু লাশ উদ্ধার করা হয়েছে  বলে গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে; যা পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে মারাত্মক ব্যর্থতা এবং এর ফলশ্রুতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জবাবদিহিতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। 

আজ বুধবার এ সকল ঘটনায় হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ  (এইচআরএফবি) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।  

বাংলাদেশ সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ নাগরিকের জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার এবং ২৭ অনুচ্ছেদ আইনের সমান সুরক্ষার অধিকার নিশ্চিত করেছে। একইভাবে, ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ধারা ১৪৯ অনুযায়ী, “যে কোনো পুলিশ কর্মকর্তা নিজ ক্ষমতায়, যতদূর সম্ভব, কোনো জ্ঞাত অপরাধ সংঘটন প্রতিরোধ করবেন” এবং ধারা ১৫০–১৫২ অনুযায়ী অপরাধ সংঘটনের সম্ভাবনা থাকলে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিয়ে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। এ ছাড়া ধারা ১৫৪–১৫৭ পুলিশকে অবিলম্বে অপরাধের তথ্য গ্রহণ, নথিভুক্তকরণ, তদন্ত এবং অপরাধী গ্রেফতারের বাধ্যবাধকতা দিয়েছে। কিন্তু রংপুরের ঘটনায় এসব আইনি বাধ্যবাধকতা স্পষ্টভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারী মাস থেকে আগস্ট মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত গনপিটুনীতে কমপক্ষে ১১৪ জন নাগরিক নিহত হয়েছে ।

বাংলাদেশ সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা (UDHR) এবং আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদ (ICCPR) -এর স্বাক্ষরকারী। এ সকল  আন্তর্জাতিক চুক্তিতে জীবনের অধিকার, ন্যায়বিচারের অধিকার, আইনের সমান সুরক্ষা এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তা প্রদানের বাধ্যবাধকতা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। এই ঘটনাগুলো শুধু অভ্যন্তরীণ আইনের নয়, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বাধ্যবাধকতারও গুরুতর লঙ্ঘন।

এইচআরএফবি মনে করে, এই ধরনের ঘটনা অবিলম্বে প্রতিরোধ না করা হলে নাগরিকের নিরাপত্তা, বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন চরমভাবে হুমকির মুখে পড়বে। রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হলো সকল নাগরিকের জীবন ও নিরাপত্তা রক্ষা করা যা সংবিধান, প্রচলিত আইন এবং আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী অবহেলার কোনো সুযোগ নেই।

টিএইচ

News