
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে রাশিয়া। এই স্বীকৃতির অংশ হিসেবে তালেবান নিযুক্ত নতুন আফগান রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছে মস্কো।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই ২০২৫) এক বিবৃতিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘ইসলামিক প্রজাতন্ত্র আফগানিস্তান সরকারের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি আমাদের দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা গড়ে তুলবে।’
এই পদক্ষেপ এমন সময় এলো যখন আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের চার বছর পর তালেবান দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বীকৃতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকী বৃহস্পতিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি জিরনভের সঙ্গে বৈঠকের একটি ভিডিও পোস্ট করে বলেন, ‘এই সাহসী সিদ্ধান্ত অন্যদের জন্য উদাহরণ হবে। স্বীকৃতির যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তাতে রাশিয়া সবাইকে ছাড়িয়ে গেল।’
যুক্তরাষ্ট্র তালেবান সরকারের শীর্ষ নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিলিয়ন ডলারের সম্পদ ফ্রিজ করে রেখেছে, যার ফলে আফগান ব্যাংকিং খাত কার্যত আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।তালেবান আগস্ট ২০২১-এ আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়, যখন মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগ করে।
রাশিয়া তখন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্থানকে ‘ব্যর্থতা' বলে অভিহিত করেছিল এবং এরপর থেকেই তালেবান প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেয়। তারা তালেবানকে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক অংশীদার ও সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে মিত্র হিসেবে বিবেচনা করছে।
২০২২ ও ২০২৪ সালে রাশিয়ার অর্থনৈতিক সম্মেলনে তালেবান প্রতিনিধিরা অংশ নেয়, আর ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে তালেবানের শীর্ষ কূটনীতিক মস্কোতে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠক করেন।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তালেবানকে ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে মিত্র’ বলে আখ্যায়িত করেন-বিশেষ করে ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রদেশ (আইএসকেপি বা আইএসআইএস-কে)-এর বিরুদ্ধে, যারা আফগানিস্তান ও রাশিয়া-উভয় জায়গায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে।
খবর আল জাজিরার।
টিএইচ