ঢাকা,

০৩ জুলাই ২০২৫


রাশিয়ায় সামরিক কারখানায় ইউক্রেনের হামলা, নিহত ৩

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ২২:১২, ১ জুলাই ২০২৫

রাশিয়ায় সামরিক কারখানায় ইউক্রেনের হামলা, নিহত ৩

ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় মঙ্গলবার রাশিয়ার ইজেভস্ত শহরের একটি সামরিক কারখানায় বিস্ফোরণে তিনজন নিহত ও অন্তত ৩৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। রুশ কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে।

উডমুরতিয়া অঞ্চলের গভর্নর আলেকজান্ডর ব্রেচালভ জানান, আহতদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। তিনি বলেন, হামলার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবহিত করা হয়েছে।

হামলার লক্ষ্য ছিল ‘কুপোল ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল প্ল্যান্ট’, যেটি ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য টর ক্ষেপণাস্ত্র ও রাডার সিস্টেম তৈরি করে। ইউক্রেনীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই কারখানায় ওসা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও ড্রোনও তৈরি হয়।

এই ছাড়া ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা (এসবিইউ) দুটি দূরপাল্লার ড্রোন দিয়ে প্রায় এক হাজার ৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে এই হামলা চালায় বলে বিবিসি ইউক্রেনকে নিশ্চিত করেছেন একজন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা। ইউক্রেনের গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘এমন প্রতিটি বিশেষ অভিযানে শত্রুর আক্রমণক্ষমতা হ্রাস পায়, সামরিক উৎপাদন ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটে এবং এটি প্রমাণ করে, রাশিয়ার গভীর অঞ্চলেও সামরিক অবকাঠামোর জন্য কোনো নিরাপদ এলাকা নেই।

বিবিসির যাচাই করা একটি ভিডিওতে একটি কারখানার ছাদে বিস্ফোরণ ঘটতে এবং সেখান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উড়তে দেখা যায়। হামলার পর রাশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা রোসাভিয়াটসিয়া ইজেভস্ক বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচলে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয়, যা কয়েক ঘণ্টা পর অবশ্য তুলে নেওয়া হয়।

গত নভেম্বরেও একই কারখানায় ইউক্রেনের ড্রোন হামলা হয়েছিল। যদিও তখন কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মস্কোও ইউক্রেনজুড়ে হামলা অব্যাহত রেখেছে। সপ্তাহান্তে রাশিয়া রেকর্ডসংখ্যক ৫৩৭টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে, যার মধ্যে কিয়েভ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভও রয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি সোমবার নিহত এফ-১৬ পাইলট লেফটেন্যান্ট কর্নেল ম্যাকসিম উস্তিমেঙ্কোকে ‘হিরো অব ইউক্রেন’ উপাধিতে মরণোত্তর সম্মাননা দেন। তিনি বিমান হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে প্রাণ হারান।

যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার সুমি অঞ্চলে অগ্রগতি স্থবির হয়ে পড়লেও মস্কো এখন পূর্বাঞ্চলীয় দিনিপ্রোপেত্রভস্ক অঞ্চলকে লক্ষ্য করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রুশ গণমাধ্যমে প্রকাশিত অসমর্থিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ বাহিনী ওই অঞ্চলের প্রথম একটি গ্রাম দখলে নিয়েছে।

মে মাস থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দুটি শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে, কিন্তু ফলপ্রসূ কোনো চুক্তি হয়নি। গত সপ্তাহে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছিলেন, রাশিয়া নতুন করে শান্তি আলোচনা করতে প্রস্তুত। যদিও তিনি দাবি করেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রস্তাবনা ‘সম্পূর্ণ বিরোধপূর্ণ’।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সোমবার আবারও পুতিনের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘পুতিন কূটনীতির নামে প্রায় অর্ধেক বছর নষ্ট করেছেন, তার ওপর এই পুরো যুদ্ধকাল তো আছেই। রাশিয়া তাদের পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আনেনি এবং যুদ্ধ থেকে সরে যাওয়ার পথ খুঁজছে না। বরং তারা নতুন অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার মধ্যে ইউরোপীয় ভূখণ্ডও রয়েছে।’

ইউক্রেন ও রাশিয়া বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ দূত কিথ কেলোগও সোমবার এক্সে বলেন, ‘রাশিয়া সময় ক্ষেপণ করতে পারে না, কারণ তারা ইউক্রেনে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে বোমা মারছে।’

এর জবাবে মস্কো দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলে, তারা ‘কোনো কিছু বিলম্ব করতে আগ্রহী নয়’ এবং যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানায়।

 

টিএইচ

News