ঢাকা,

০৪ জুলাই ২০২৫


এবার ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বানাচ্ছে ভারত!

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১৯:০৬, ৩ জুলাই ২০২৫

এবার ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বানাচ্ছে ভারত!

গত ২২ জুন ইরানের ফরদো পারমাণবিক স্থাপনায় ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা জিবিইউ ৫৭ দিয়ে হামলা চালায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এতে পরমাণু স্থাপনাটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের।

সেই সময়ই ব্যাপকভাবে পরিচিতি পায় মার্কিন বাঙ্কার বাস্টার বোমা। কেননা, ইরানের গোপন ফরদো পারমাণবিক স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়ার মতো আর কোনও বোমা নেই বলে সে সময় ব্যাপক কৌতুহলের জন্ম দেয় জনমনে।

এবার জানা যায়, প্রতিবেশি ভারতও বাঙ্কার বাস্টার ক্ষেপণাস্ত্র বানাচ্ছে।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলাপমেন্ট অরগানাইজেশন (ডিআরডিও) অগ্নি-পাঁচের নতুন ভার্সান তৈরি করছে। এই অগ্নি-পাঁচ ৮০ থেকে ১০০ মিটার মাটির গভীরে গিয়ে কংক্রিটের আস্তরণ ভেদ করতে পারবে বলে দাবি করা হচ্ছে। সাড়ে সাত হাজার কিলোগ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করে নিয়ে যেতে পারবে এই ক্ষেপণাস্ত্র।

ক্ষেপণাস্ত্রটির দুইটি ভার্সান থাকবে। একটি আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে সাড়ে সাত হাজার কিলোগ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক নিয়ে বাঙ্কার বাস্টারের কাজ করবে। এটা সুপারসনিক গতিতে যাবে। অন্যটি পাঁচ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে পারবে।

ভারতের অগ্নি-পাঁচ-ও যুক্তরাষ্ট্রের বাঙ্কার বাস্টার জিবিইউ ৫৭-র মতোই শক্তিশালী হবে বলে দাবি করা হয়েছে।

বাঙ্কার বাস্টার ক্ষেপণাস্ত্র হলো এক বিশেষ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র যা মাটির গভীরে ঢুকে লক্ষে আঘাত করতে পারে এবং মিলিটারি বাঙ্কার, কমান্ড সেন্টার, মিসাইল রাখার জায়গা ও অস্ত্রভাণ্ডারে গিয়ে আঘাত করতে পারে। সাধারণ যুদ্ধাস্ত্র বা বোমা মাটির ওপর গিয়ে পড়ে এবং বিস্ফোরণ হয়। কিন্তু বাঙ্কার বাস্টার মাটির ভিতরে ঢুকে কংক্রিটে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক লেফটোন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এটা একটা ডেটারেন্ট (ভীতি) হিসেবে কাজ করবে। যেকোনও দেশের মাসল পাওয়ার বাড়ানোর দরকার হয়। কোনও সন্দেহ নেই, ভারতের সামরিক বাহিনীর কাছে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।

উৎপল ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “এই অস্ত্র মাটির গভীরে চলে যেতে পারে। কয়েকটা পর্যায়ে এর ডেটোনেশন হয়। প্রথমে ওপরে হয়, তারপর ভেতরে ঢুকে বারবার তা বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। এটা নির্দিষ্ট একটি কোণে রাখতে পারলে টার্গেটে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আঘাত করতে পারে। তাই এই অ্যাঙ্গেল বা কোণটা খুবই জরুরি।

তিনি জানিয়েছেন, “এখন মার্কিন বাঙ্কার বাস্টার দেখার পর ভারতের এই প্রয়াস নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে ভারত আগেই এই অস্ত্র বানানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে।”

আধুনিক যুদ্ধে এই বাঙ্কার বাস্টার খুব জরুরি বলে মানা হয়। কারণ, অন্য দেশের কমান্ড ও কন্ট্রোল কেন্দ্রগুলো এখন মাটির নিচে থাকে। অস্ত্র, জ্বালানি, রাসায়নিক ও জৈবিক অস্ত্রও মাটির তলায় রাখা হয়। সেগুলোতে আঘাত করতে চাইলে বাঙ্কার বাস্টার দরকার হয়।

 সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমসইন্ডিয়া টিভি, ডয়েচে ভেলে

টিএইচ

News