
কাতারে যুদ্ধবিরতি নিয়ে পরোক্ষ আলোচনার মধ্যেই ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৮৪ জন নিহত হয়েছেন। চিকিৎসকদের বরাতে আল জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদন বলছে, বুধবার ভোর থেকে উত্তর গাজায় জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরসহ বেশ কিছু স্থানে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছেন। দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে আরও ১০ জন নিহত হয়েছেন। এ বিষয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আল জাজিরা বলছে, জাবালিয়ায় উদ্ধারকর্মীরা শিশুদের মরদেহ সরাতে কেবল মোবাইল ক্যামেরার আলো ব্যবহার করছেন। ধসে পড়া কংক্রিটের স্ল্যাব ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আল জাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, ইসরায়েল পরিকল্পিত এবং তীব্রতর সামরিক বিমান অভিযান চালাচ্ছে। এই হামলা হচ্ছে আবাসিক বাড়িগুলোকে লক্ষ্য করে, যাতে পরিবারগুলোকে এই এলাকাগুলো ছেড়ে অস্থায়ী তাঁবুতে বসবাস করতে বাধ্য করা হয়। উত্তর গাজা থেকে তাঁদের বাস্তুচ্যুত করার যেকোনো পরিকল্পনাকে সহজতর করবে এ হামলা।
তিনি বলেন,এটি একটি অত্যন্ত নাটকীয় বাস্তবতা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তর গাজার শিশু ও বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে যে মানবিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে তার তীব্রতা তুলে ধরে এ হামলা।
আল জাজিরা লিখেছে, সম্প্রতি ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের এক সংক্ষিপ্ত বিরতির পর ইসরায়েলি-আমেরিকান জিম্মি এডান আলেকজান্ডারের মুক্তি দেওয়া হয়। এর পরই কাতার, মিশর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে হামাসের সাথে পরোক্ষ যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল দোহায় যায়। এ অবস্থাতেই এই হামলা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ আল বলেন, যুদ্ধবিরতি আলোচনায় সকল ক্ষেত্রেই দুর্দান্ত অগ্রগতি হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি এবং অবরুদ্ধ গাজায় সাহায্য প্রবেশ পুনরায় শুরু করা নিয়ে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে। বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে উইটকফ বলেন, তিনি আশা করেন শিগগিরই একটি ইতিবাচক ঘোষণা আসবে।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার পুনর্ব্যক্ত করেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করবে না।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৫২ হাজার ৯০৮ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি হামলা গাজার বেশিরভাগ স্থান ধ্বংস করে দিয়েছে এবং ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে।
টিএইচ