
ফাইল ছবি
১৯ দিনের উত্তেজনার পর ভারত ও পাকিস্তান অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। শনিবার (১০ মে) বিকাল ৫টা থেকে এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় বলে নিশ্চিত করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী।
সর্বশেষ এই সঙ্কটের সূচনা হয় গত ২২ এপ্রিল, যখন ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় এক বিদেশি নাগরিকসহ ২৬ জন নিহত হন। এ ঘটনার জন্য শুরু থেকেই পাকিস্তানকে দোষারোপ করে ভারত। ইসলামাবাদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে এবং স্বচ্ছ তদন্তের প্রস্তাব দেয়।
পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। কূটনৈতিক সম্পর্ক কমানো, সীমান্ত বন্ধ, ভিসা বাতিল ও বিমান চলাচল বন্ধের মতো নানা পদক্ষেপ নেয় উভয় দেশ। সীমান্তে গোলাগুলি, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও ড্রোন আক্রমণ শুরু হয়। ভারত শুরু করে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের সামরিক অভিযান, যার জবাবে পাকিস্তান চালায় ‘অপারেশন বুনইয়ান-উন-মারসুস’।
সাম্প্রতিক দিনে এই উত্তেজনা পারমাণবিক সংঘর্ষের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। আন্তর্জাতিক মহল, বিশেষ করে জি-৭ দেশগুলো, উভয়পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানায়।
এই সঙ্কটের মধ্যেই শনিবার বিকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির বক্তব্য অনুযায়ী, দুই দেশের ডিরেক্টর জেনারেল মিলিটারি অপারেশন্স (ডিজিএমও) একে অপরের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং বিকেল ৫টা থেকে স্থল, আকাশ ও জলপথে সব ধরনের সামরিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারও এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ইসলামাবাদ সবসময় শান্তির পক্ষে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আগ্রহী।
এই যুদ্ধবিরতির পেছনে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স গত ৪৮ ঘণ্টা ভারত ও পাকিস্তানের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে টানা আলোচনার মাধ্যমে দুই পক্ষকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে সক্ষম হন।
রুবিও জানিয়েছেন, দুই দেশ একটি নিরপেক্ষ স্থানে আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছে, যেখানে দ্বিপাক্ষিক ইস্যুতে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলেও দুই পক্ষের মধ্যে আস্থার ঘাটতি থাকায় পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলা যাচ্ছে না। তবে এই চুক্তি দক্ষিণ এশিয়ায় সম্ভাব্য যুদ্ধ থেকে অন্তত আপাতত মুক্তি দিয়েছে।
ইউ