বাজেটে বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন না এনে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় কমিয়ে ভর্তুকির ওপর নির্ভরতা ধীরে ধীরে হ্রাস করার পরিকল্পনাও তুলে ধরা হয়েছে।

সোমবার (২ জুন) বাজেট ঘোষণাকালে এ তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং অর্থনীতি সচল রাখতে জ্বালানির পর্যাপ্ত ও সাশ্রয়ী সরবরাহ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে বিদ্যুতের দাম আপাতত না বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

অর্থ উপদেষ্টা জানান, বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সার্বিক ব্যয় ১০ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিগুলোর পুনর্মূল্যায়ন এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর এনার্জি অডিট করা হবে।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে অভ্যন্তরীণ জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর জন্য গৃহীত হয়েছে বেশ কিছু পদক্ষেপ। চলতি বছরের মধ্যেই অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৬৪৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ এবং ২০২৮ সালের মধ্যে স্থানীয় কূপ থেকে অতিরিক্ত ১৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের পরিকল্পনার কথাও জানান অর্থ উপদেষ্টা।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ১২ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে বরাদ্দ ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় বরাদ্দ ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদ্যুৎখাতে এই ব্যয়সংযত কৌশল জনগণের ওপর সরাসরি চাপ না দিয়েই অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করার একটি চেষ্টা। তবে উৎপাদন ব্যয় কতোটা কমানো সম্ভব হবে, তা নির্ভর করবে বাস্তবায়ন দক্ষতা ও চুক্তির পুনর্মূল্যায়নের উপর।