
প্রথমবারের মতো উইম্বলডনের ফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়লেন পোল্যান্ডের ইগা শিয়াওতেক। তবে শুধুই ইতিহাস নয়, শিয়াওতেক গড়েছেন দাপটের নতুন এক নজির। অপর প্রান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ তারকা অ্যামান্ডা অ্যানিসিমোভার চমকজাগানিয়া পথচলা থেমে গেল ফাইনালের মঞ্চেই।
শনিবার সেন্টার কোর্টে উইম্বলডনের মেয়েদের এককে মাত্র ৫৭ মিনিটে ৬-০, ৬-০ গেমে জয় তুলে নেন শিয়াওতেক।
পুরো ম্যাচে প্রতিপক্ষকে কোনো সুযোগই দেননি ২৪ বছর বয়সী এই পোলিশ তারকা।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যামে নিজের ১০০তম জয় তুলে নেন শিয়াওতেক। এটি তার ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফি—আগের চারটি এসেছে ফরাসি ওপেন থেকে, একটি ইউএস ওপেন। আর এবার প্রথমবারের মতো উইম্বলডনের মুকুট উঠল তার মাথায়।
একই সঙ্গে তিনি হয়ে গেলেন উইম্বলডনের একক শিরোপা জয়ী প্রথম পোলিশ খেলোয়াড়।
অ্যামান্ডা অ্যানিসিমোভা অবশ্য এখানেই থামার গল্প নন। বাবাকে হারানো, মানসিক অবসাদে টেনিস থেকে বিরতি নেওয়ার পর ৪০০ র্যাঙ্কিংয়ের বাইরে ছিটকে পড়া অ্যানিসিমোভা গত বছর আবার ফিরে আসেন কোর্টে। উইম্বলডনে এসেছিলেন ১৩তম বাছাই হিসেবে।
কিন্তু একের পর এক চমক দেখিয়ে সেমিফাইনালে হারিয়েছেন র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা আরিনা সাবালেঙ্কাকে। ফাইনাল পর্যন্ত সেই গল্পটা ছিল রূপকথার মতোই, যতক্ষণ না শিয়াওতেক নামলেন কোর্টে।
শিয়াওতেকের এমন জয় অনেককে ফিরিয়ে নিয়েছে ৩৭ বছর পেছনে। ১৯৮৮ সালের ফরাসি ওপেনের ফাইনালে ঠিক এমনভাবেই মাত্র ৩৪ মিনিটে ৬-০, ৬-০ গেমে জয় পেয়েছিলেন জার্মান কিংবদন্তি স্টেফি গ্রাফ। ওপেন যুগে এটি ছিল গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে দ্বিতীয়বারের মতো এমন স্কোরলাইন।
এই জয়ের পর গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে শিয়াওতেকের রেকর্ড দাঁড়াল ৬–০। অর্থাৎ, যতবার ফাইনালে উঠেছেন ততবারই জিতেছেন।
উইম্বলডনের মুকুট মাথায় তুলে শিয়াওতেক নিজেই যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না এমন দাপুটে পারফরম্যান্সে জয়ের গল্প, ‘খুবই অবাস্তব লাগছে। এমন কিছু নিয়ে কখনও স্বপ্ন দেখিনি। আগের গ্র্যান্ড স্ল্যামগুলো জিতে নিজেকে অভিজ্ঞ মনে হতো, কিন্তু এভাবে জিতব, সেটা ভাবিনি।’
বিজয়ের উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে যেতে প্রতিপক্ষকেও মনে রেখেছেন শিয়াওতেক। তিনি বলেন, ‘অ্যামান্ডা দারুণ দুই সপ্তাহ কাটিয়েছে। আমি তাকে অভিনন্দন জানাতে চাই। তুমি যেভাবে খেলেছ, তা নিয়ে গর্বিত হওয়া উচিত। আশা করি, সামনে আরও ফাইনালে আমরা মুখোমুখি হব।’
টিএইচ