সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপনকে স্বাগত জানাল উদীচী;  বিরোধিতাকারীদের রুখে দেয়ার আহ্বান

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সঙ্গীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক শিক্ষক নিয়োগে সরকারের প্রজ্ঞাপনকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। একইসাথে যারা সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের বিরোধিতা করছেন তাদের প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাদেরকে রুখে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে উদীচী। 

আজ রবিবার এক বিবৃতিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে এ আহ্বান জানান। 

বিবৃতিতে উদীচীর নেতৃবৃন্দ বলেন, যারা ছোটবেলা থেকেই সুর ও সঙ্গীত সাধনার মধ্য দিয়ে বড় হয় তাদের মধ্যে শুভবোধ সদাজাগ্রত থাকে। তারা অসুর বা মন্দ কোন কাজের দিকে ধাবিত হয় না। সুরের প্রতি আকর্ষণ মানুষের জৈবিক বিষয়। আবহমান কাল ধরে বাংলার পথে প্রান্তরে হাজারো রকমের সঙ্গীত চর্চা হয়ে আসছে এবং সঙ্গীত চর্চা বাংলাদেশের জাতীয় সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। তাই, শিশুদেরকে সঙ্গীত শিক্ষা দেয়ার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য। 

উদীচীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, যারা সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের বিরোধিতা করছেন তারা শিশুদের মানসিক বিকাশ, নৈতিক শিক্ষা, সৃজনশীলতা ও সহনশীলতা বৃদ্ধির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চাইছেন। তারা সুস্থ সংস্কৃতি চর্চায় বাধা সৃষ্টি করছেন। বাংলাদেশের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিককে নিজস্ব সংস্কৃতি ও শিল্প-সাহিত্য চর্চার অধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে উদীচীর নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, দেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, গণজাগরণ মঞ্চ আন্দোলন, চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানসহ সামাজিক আন্দোলনে সঙ্গীত ও শিল্প-সংস্কৃতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সঙ্গীত শিক্ষাকে শুধু বিনোদনের বিষয় হিসেবে দেখা যাবে না। 

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবি শুধু সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থি নয়, এটি জাতীয় সংস্কৃতিকে দুর্বল করার চেষ্টা হিসেবেও ধরা যায় বলে মন্তব্য করেন উদীচীর নেতৃবৃন্দ। উদীচীর মতে, এ ধরনের প্রচেষ্টা শুধু সাংস্কৃতিক বিকাশই বাধাগ্রস্ত করবে না, এটি দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় ঐক্য এবং বহুত্ববাদী চেতনার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাই, কারো বিরোধিতায় কান না নিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় শুধু না, দেশের সব পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানান উদীচীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।