ঢাকা,

১১ জুলাই ২০২৫


বিপৎসীমার দুই মিটার নিচে গোমতী নদীর পানি

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:১৭, ১০ জুলাই ২০২৫

বিপৎসীমার দুই মিটার নিচে গোমতী নদীর পানি

টানা ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। ফলে নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের মাঝে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। গত বছরের বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না পারা এসব বাসিন্দারা এখন আরেকটি বন্যার মুখোমুখি। ফলে হতাশা আর দীর্ঘশ্বাসে প্রহর কাটছে তাদের।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় গোমতী নদীর পানি ৯ দশমিক ৬৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা যায়। এই নদীর বিপৎসীমা ১১ দশমিক ৩ মিটার। বিপৎসীমার ১ দশমিক ৬২ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতী নদীর পানি।

আগের ২৪ ঘণ্টা (মঙ্গলবার-বুধবার) টানা ভারী বর্ষণ হলেও বুধবার (৯ জুলাই) সারারাত থেমে থেমে বৃষ্টি পড়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভোর থেকে অঝোর বৃষ্টি হয়ে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলে। সকাল ১০টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৃষ্টি ছিল না কুমিল্লা অঞ্চলে।

অপরদিকে, বৃষ্টি থামলেও থেমে নেই ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢল। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অঝোরে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। সেখানকার পানি গোমতী নদী বেয়ে নদীর কুমিল্লা অংশে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত গোমতী নদীর পানি ছিল বিপৎসীমার ৯ দশমিক ৪২ মিটারে। বুধবার সকাল ৮টায় পানি ছিল বিপৎসীমার ৮ মিটারে। বুধবার দিনব্যাপী নদীর পানি ১ দশমিক ৪২ মিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত নদীটির পানি বেড়েছে শূন্য দশমিক ২৬ মিটার। ৪৮ ঘন্টায় গোমতী নদীর পানি বেড়েছে ৫ থেকে ৬ মিটারের মতো।

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওয়ালিউজ্জামান বলেন, বুধবার রাতে ভারী বর্ষণটা ছিল না। ভোরে আবার বর্ষণ ছিল। এখন আবার নেই। পানির প্রবাহ কিছুটা কম গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে উজান থেকে নেমে আসা ঢল বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না।

অন্যদিকে, গত বছরের বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না পারা মানুষজন নতুন করে বন্যার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। এসব মানুষের উৎকন্ঠা যেন গেল বছরের চেয়েও বেশি।

নদী পাড়ের বাসিন্দা আমির আলী বলেন, একটা বছরও পার হলো না, নতুন করে আবার বন্যার আশংকা। গত বছর বন্যায় ঘর তলিয়ে গিয়েছিল। স্থানীয়দের সহযোগিতায় নতুন ঘর পেয়েছি। এটাও যদি ভেসে যায়, এবার আর কোনো উপায় থাকবে না।

খোরশেদা বেগম নামের এক বাসিন্দা বলেন, বন্যা এলে সবারই দুর্গতি। গত বছর আমাদের দুর্গতি সারাদেশের মানুষ দেখেছে। এখন আবার আমরা বন্যার সম্মুখীন। কী বলব ভাষা জানা নেই।

কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, গোমতীর পানি বৃদ্ধির লক্ষণ দেখা মাত্র আমরা ৫৮৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেছি। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার এবং সরকারি চাল মজুদ আছে। সব উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

টিএইচ

News