ঢাকা,

০৯ জুলাই ২০২৫


ফেনীতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা, সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:১৬, ৯ জুলাই ২০২৫

ফেনীতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা, সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত

ফেনীতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে সীমান্তবর্তী ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো মানুষ। বিভিন্ন সড়ক পানিতে তলিয়ে গিয়ে ব্যাহত হচ্ছে যানচলাচল। 

তবে আজ বুধবার (৯ জুলাই) বৃষ্টি কমার সঙ্গে সঙ্গে শহরে সৃষ্ট জলাবদ্ধতাও কমতে শুরু করেছে। এতে শহরবাসীর কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। 

পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পরশুরাম উপজেলার জঙ্গলঘোনায় দুইটি, অলকায় তিনটি, শালধর এলাকায় একটি, ফুলগাজী উপজেলার উত্তর শ্রীপুর এলাকায় একটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সিলোনিয়া নদীর পরশুরামের গদানগর এলাকায় একটি ও ফুলগাজীর দেড়পড়া এলাকার দুইটি স্থানে ভেঙেছে। এছাড়া কহুয়া নদীর পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়ায় দুইটি, বেড়াবাড়িয়ায় একটি ও ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেল থেকে এসব স্থানে ভাঙনের দেখা দেয়।

ফুলগাজীর নিলক্ষ্মী এলাকার বাসিন্দা মাসুদুর রহমান বলেন, বৃষ্টি কিছুটা কমেছে। তবে ভাঙন স্থানগুলো দিয়ে এখনো পানি ঢুকছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গেল বছরের বন্যার মতো এবারও মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যা নিয়ে ভুগতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।

পরশুরামের তুলাতলী এলাকার বাসিন্দা আরিফ হোসেন বলেন, গতকাল সন্ধ্যা থেকে পানি বাড়তে শুরু করেছে। এখন চারদিকে থইথই পানি। বিভিন্ন সড়ক পানিতে তলিয়ে যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। বন্যার্তদের জন্য কোনো শুকনো খাবার বা সহায়তা আসেনি। এখনো বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।

শহরের একাডেমি এলাকার বাসিন্দা তোফায়েল নিলয় বলেন, কিছু সড়কে গতকাল কোমর সমান পানি ছিল। বৃষ্টি কমার সঙ্গে পানি অনেক নেমে গেছে। তবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল না থাকায় পানি ধীরগতিতে নামছে। পৌরসভা ও জেলা প্রশাসন যদি খালগুলো দখলমুক্ত না করে ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ না করেন, তাহলে এভাবে অল্প বৃষ্টিতেই আমাদের দুর্ভোগে পড়তে হবে। 

পরশুরামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, রাত থেকে বাঁধের কোনো স্থানে নতুন করে ভাঙেনি। লোকালয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। আমরা দুর্গতদের পাশে থেকে কাজ করছি। 

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, জেলায় টানা তিন দিন ধরে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বুধবার (৯ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গতকালের তুলনায় বৃষ্টিপাত কমেছে। আগামীকালও জেলাজুড়ে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, আমরা সকাল পর্যন্ত ১১টি স্থানে ভাঙনের তথ্য পেয়েছি। এই বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে মধ্যরাত থেকে পানি কিছুটা কমেছে। উজানে বৃষ্টি বন্ধ থাকলে বাঁধ ভাঙনের শঙ্কা কমবে।

টিএইচ

News