
জাতীয় নির্বাচন পুরোপুরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের ঘটনায় উদ্বেগ ও দ্রুত নির্বাচনে ভারতের আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার বাসসকে এই প্রতিক্রিয়া দেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি পুরোপুরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমরা সবাইকে আহ্বান জানাই, নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছার প্রতি যেন সবাই শ্রদ্ধা দেখায়।’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল মঙ্গলবার সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিসর সংকুচিত হচ্ছে। ভারত আশাবাদী, দ্রুত বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। গণতন্ত্র ফিরে আসবে।’
এই সময় আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের ঘটনায় উদ্বেগও প্রকাশ করেন তিনি।
প্রতিক্রিয়ার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের কারণে সৃষ্ট ক্ষত এখনো তরতাজা। আমরা দেখেছি, কীভাবে আওয়ামী লীগ আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছে, আমাদের রাজনৈতিক পরিসর মারাত্মকভাবে সংকুচিত করেছে এবং তাদের ১৫ বছরের স্বৈরাচারী ও লুটপাটের শাসনামলে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে আপোষের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন ছিল।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমাদের মনে আছে, কীভাবে আওয়ামী লীগ বারবার প্রহসনমূলক নির্বাচনের আশ্রয় নিয়েছে এবং আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলোর অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনের জন্য একটি সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।’
বিচার নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকের পর এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এর একদিন পর সোমবার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ফলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারায় দলটি।
নির্বাচন কমিশন সচিব আক্তার আহমেদ জানান, আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের আলোকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
টিএইচ