ঢাকা,

২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫


গৃহকর্মীদের শ্রম আইনে শ্রমিক হিসেবে  অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান 

তারেক হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত হয়েছে: ২২:২৫, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আপডেট: ২১:৩১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গৃহকর্মীদের শ্রম আইনে শ্রমিক হিসেবে  অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান 

গৃহকর্ম ও গৃহকর্মীদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং  শ্রম আইনে শ্রমিক হিসেবে  অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। এছাড়াও তাদের সুরক্ষা, অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি  জানিয়েছেন ।

তারা বলেছেন,  গৃহকর্মীরা আইনগত স্বীকৃতি, চাকরির চুক্তি, ন্যায্য মজুরি ও সামাজিক সুরক্ষা না পাওয়ায় নানা চ্যালেঞ্জের মুখে আছেন। তাই সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর লালমাটিয়ায় এনজিও ফোরাম কনফারেন্স হলে দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) ও গৃহকর্মী আঞ্চলিক ফোরাম আয়োজিত ‘সময় এখন, গৃহকর্ম ও গৃহকর্মীর সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির। শ্রমিক হিসেবে গ্রাম আইনে অন্তর্ভুক্তির’ শীর্ষক সংলাপ এসব কথা বলেন তারা। মোহাম্মদপুর গৃহকর্মী আঞ্চলিক ফোরামের সভাপতি হুমায়ারা বেগমের সভাপতিত্বে ও ডিএসকের প্রকল্প কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র অধিকারীর সঞ্চালনায় সংলাপে বক্তৃতা দেন উত্তর সিটি করপোরেশনের তিন থানার শহর সমাজসেবা কাযালয়ের সমাজ সেবা অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম ও রাসেল আহমেদ সজীব, মোহাম্মদপুর থানার ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা ফসিহ উদ্দিন সরকার , যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক  নাসরিন আহমেদ, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, মোহাম্মদপুর থানার এস আই মমতাজ বেগম, শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ-স্কপের আহসান হাবিব বুলবুল, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের শিল্পী সাহা, ট্রেড ইউনিয়নের দপ্তর  সম্পাদক শাহিদা পারভীন শিখা,  সুনীতি প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আফরিন আক্তার, গৃহকর্মী মর্জিনা সুলতানা, তানিয়া, রুবিনা বেগম,  জাহানারা স্বপ্না প্রমুখ।

সভায় শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন, গৃহকর্মের কাজ আর অদৃশ্য থাকতে পারে না। এ কাজে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি, তদারকি ও শোষণ-নির্যাতন রোধে শক্তিশালী ব্যবস্থা দরকার। কমিশনের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে ২৮টি সুপারিশ মন্ত্রণালয় ও সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে গৃহকর্মীদের অধিকার ও সুরক্ষার বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত। গৃহকর্মীদের শ্রম আইন ও সামাজিক সুরক্ষা কাঠামোর আওতায় আনতে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
জবাবে সরকারি কর্মকর্তারা বলেন, সরকার গৃহকর্মীদের অবদানকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।

সরকার তাদের অধিকার নিশ্চিত, ন্যায্য আচরণ ও সামাজিক সুরক্ষা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ জন্য অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে কার্যকর নীতি বাস্তবায়ন করা হবে। আরো বলা হয়, গৃহকর্মীদের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। নীতি প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ডাটাবেস করা হচ্ছে বলেও জানান তারা।

ফসিহ উদ্দিন সরকার বলেন, কোনো জনগোষ্ঠীকে পিছনে ফেলে এগুনো সম্ভব নয়। গৃহকর্মী পরিবারের সহকমী। তাদের জন্য নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। তাদেরকে সচেতন করতে  মহড়া, আগুন নেভানো, উদ্ধার,  তথ্য দেওয়া ইত্যাদি প্রশিক্ষণ প্রদান করা দরকার। মোহাম্মদপুর ফায়ার সার্ভিসের ফোন নাম্বার ০১৯০১০২০৭৬৪ এবং টোল ফ্রি  কল নাম্বার  ১০২  তে ফোন করলে সেবা পাওয়া যাবে। 

গৃহকর্মী রুবিনা বেগম বলেন, সিটি  করপোরেশনে সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছি।

বক্তারা আরো বলেন, টেকসই পরিবর্তনের মূল হলো সম্মিলিত সহযোগিতা। বিভিন্ন পক্ষ একসঙ্গে কাজ করলে গৃহকর্মীদের দক্ষতা, স্বীকৃতি ও মর্যাদা অর্জনের পথ তৈরি হয়। সুনীতি প্রকল্পসহ সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগ এই সহযোগিতাকে আরো শক্তিশালী করছে। গৃহকর্মীদের প্রকৃত অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে সরকার, শ্রমিক সংগঠন ও নাগরিক সমাজের সমন্বয় অপরিহার্য।

টিএইচ

News