ঢাকা,

০৫ জুলাই ২০২৫


আলোচিত বিগ বিউটিফুল বিলে সই করলেন ট্রাম্প

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১২:০২, ৫ জুলাই ২০২৫

আলোচিত বিগ বিউটিফুল বিলে সই করলেন ট্রাম্প

প্রস্তাবিত বড় ধরনের কর ছাড় ও ব্যয় বিলে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (৪ জুলাই) হোয়াইট হাউজে এই বিলে সই করেন তিনি। এর ফলে বিলটি এখন আইনে পরিণত হলো।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস ৪ জুলাই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিলটি সই করা হয়। ফলে অনুষ্ঠানটি কার্যত ট্রাম্পের একটি রাজনৈতিক সমাবেশের রূপ নেয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

অনুষ্ঠানে সামরিক জেট বিমান ওড়ানো হয়। সেখানে ট্রাম্পের শত শত সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। বিলটি স্বাক্ষরের একদিন আগেই রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের এই প্রধান আইন অল্প ভোটের ব্যবধানে পাস হয়। বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ২১৮, আর বিপক্ষে ২১৪টি।

এই বিলের মাধ্যমে ট্রাম্পের অভিবাসন দমন অভিযান তহবিল পাবে। বিলটি ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদকালে দেওয়া কর ছাড়েরই সম্প্রসারিত রূপ। কারণ এতে ২০১৭ সালের কর ছাড় স্থায়ী করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে এতে কয়েক মিলিয়ন আমেরিকান স্বাস্থ্যবিমা হারাবেন। তবে এ বিলে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের পরিমাণ আরও ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার বেড়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি কখনো দেখিনি আমাদের দেশে মানুষ এতটা খুশি হয়েছে। কারণ এতে নানা ধরনের মানুষ উপকৃত হচ্ছে: সেনাবাহিনী, বেসামরিক নাগরিক, বিভিন্ন ধরনের চাকরিজীবীরা।’

তিনি হাউস স্পিকার মাইক জনসন ও সিনেট সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা জন থুনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ আপনারা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কর ছাড় এনে দিয়েছেন। সবচেয়ে বড় ব্যয় ছাঁটাই এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সীমান্ত নিরাপত্তা বিনিয়োগ।’

ট্রাম্প হোয়াইট হাউজের সাউথ লনে এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি ৪ জুলাই স্বাধীনতা দিবসে নির্ধারণ করেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেয় স্টেলথ বোমার ও ফাইটার জেটের ফ্লাইওভার — যেগুলো সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলায় অংশ নিয়েছিল। এছাড়া শত শত ট্রাম্প সমর্থক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তাদের মধ্যে ছিলেন হোয়াইট হাউজের সহযোগী, কংগ্রেস সদস্য ও সামরিক পরিবারগুলো।

এক বক্তৃতায় ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের “উত্থান” নিয়ে আত্মপ্রশংসামূলক দাবি করেন। তারপর তিনি বিলটিতে স্বাক্ষর করেন। রিপাবলিকান কংগ্রেসনাল নেতা ও নিজের মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে ছবি তোলেন এবং খুশিতে উদ্বেলিত সমর্থকদের ভিড়ে হাঁটেন।

এই বিল পাস হওয়া ট্রাম্প ও তার রিপাবলিকান মিত্রদের জন্য একটি বড় জয়। কারণ তারা দাবি করছেন এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

ট্রাম্পের দলে কিছু আইনপ্রণেতা বিলটির ব্যয় ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচিতে নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও শেষ পর্যন্ত প্রতিনিধি পরিষদের ২২০ জন রিপাবলিকানের মধ্যে মাত্র দুইজন এর বিরুদ্ধে ভোট দেন। বাকি সবাই সমর্থন করেন। ২১২ জন ডেমোক্র্যাট বিলটির বিরুদ্ধে ভোট দেন।

এই বিল নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে হাউজ ডেমোক্র্যাট নেতা হাকিম জেফ্রিস প্রতিনিধি পরিষদের ইতিহাসের দীর্ঘতম ভাষণ দেন-৮ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট। ভাষণে তিনি বিলটিকে ধনী শ্রেণির জন্য এটিকে ‘উপহার’ হিসেবে আখ্যা দেন। তার অভিযোগ, এটি কম আয়ের আমেরিকানদের স্বাস্থ্য বীমা ও খাদ্য সহায়তা কেড়ে নেবে।

ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির চেয়ার কেন মার্টিন বলেন, এই আইন ২০২৬ সালের কংগ্রেস নির্বাচনে রিপাবলিকানদের ভোটে ক্ষতির কারণ হবে।

তিনি বলেন, ‘আজ ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপাবলিকান পার্টির ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন — এই দল এখন কেবল বিলিয়নিয়ার ও বিশেষ স্বার্থ গোষ্ঠীর পক্ষেই, সাধারণ শ্রমজীবী পরিবারের পক্ষে নয়।’

তিনি আরও বলেন, এই আইন রিপাবলিকানদের ঘাড়ে বছরের পর বছর ঝুলে থাকবে। এটি ছিল আমেরিকান জনগণের সঙ্গে এক পূর্ণাঙ্গ বিশ্বাসঘাতকতা। আমরা রিপাবলিকানদের সতর্ক করছি, আপনারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবেন।’

টিএইচ

News