
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান ভূইয়ার বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগ উঠেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেংগুরা ইউনিয়নের চৈতানগর থেকে কাঠালবাড়ি পর্যন্ত নির্মাণাধীন প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কের বিষয়ে কন্টেন্ট প্রকাশ হওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার (১৩ মে) লেংগুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান ভূইয়া গণমাধ্যমকর্মীদের রাস্তাটি সরেজমিনে দেখার আমন্ত্রণ জানান। এসময় নেত্রকোণা জেলা ও কলমাকান্দা উপজেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত জনাবিষেক গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তিনি উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের সড়কটি দেখিয়ে জানান যে, এ সড়কটি পঞ্চাশ -একশো বছর আগে থেকেই চালু রয়েছে। পর্যটকদের সুবিধার্থে পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে সড়কটি তিনি নির্মাণ করছেন। তিনি আরো জানান, সড়কটি নির্মাণে স্থানীয় বাসিন্দারা উপকৃত হবেন। এমনকি সড়কটি নির্মাণ হলে বনবিভাগও তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারবে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এ সড়ক নির্মাণ নিয়ে নানা ধরনের আলেচনা সমালোচনা হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের একদম লাগোয়া এ গ্রামটিতে এ সড়ক নির্মাণের ফলে চোরাকারবারি মালামাল পরিবহনে সুবিধা হবে। পাশাপাশি অনেকেই বলছেন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এ অংশে চোরকারকারিরা বেশ সক্রিয় বর্ষাকালে চোরাকারবারিদের শ্রমিক দিয়ে চোরাকারবারি পণ্য আনা নেওয়া করতে হয়। সড়কটি নির্মাণ হলে সরাসরি মাল বিভিন্ন যানবাহনে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে সহজে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে।
তবে এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান ভূইয়া গণমাধ্যমে বলেন, চোরাকারবারি হলে আমরা সবাই মিলে প্রতিহত করবো।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী চোরাকারবারি হটস্পট হিসেবে পরিচিত এ পাহাড়ী সড়কটিতে সুপারি চোরাচালানের জেরে চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হেলাল নামে এক সুপারি শ্রমিক নিহত হয়।
এদিকে স্থানীয় বনবিভাগের বিট অফিসে কর্মরত বনরক্ষী আক্তার মিয়া জানান, চেয়ারম্যান তার জোর খাটিয়ে অবৈধ ভাবে পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করছেন। এব্যাপারে আমরা বনবিভাগ থেকে চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান ভূইয়াকে জানানোর পর থেকে আমাদেরকে গালিগালাজসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমি আমার জীবন নিয়ে শংকায় আছি।
এদিকে কলমাকান্দা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ সড়কটি নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাহাড় কাটার অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে, আপাতত সড়কটির নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
টিএইচ