
ইরানের কাছে পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউস এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। এই ছাড়া ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানিয়েছেন, ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আলবুসাইদি তেহরান সফরে এসে ‘যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তির কিছু বিষয়’ তাঁর কাছে উপস্থাপন করেছেন। আজ রোববার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানায়, ইরান উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত বাড়িয়েছে। এটি পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
গতকাল শনিবার হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লিয়াভিট বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পরমাণু চুক্তির যে প্রস্তাবটি পাঠানো হয়েছে, সেটি গ্রহণ করাই ইরানের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে। কারণ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ইরান কখনোই পরমাণু শক্তিধর দেশ হতে পারবে না।’
এই সময় লিয়াভিট জানান, একটি ‘বিস্তারিত ও গ্রহণযোগ্য’ প্রস্তাব প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মাধ্যমে ইরানকে পাঠানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের ব্যাপারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘জাতীয় স্বার্থ ও ইরানের জনগণের অধিকারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের যথাযথ জবাব দেওয়া হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে কী কী বিষয় রয়েছে, তা বিস্তারিত জানা যায়নি। বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্র এমন এক সময় চুক্তির প্রস্তাব পাঠাল, যখন আইএইএ ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
আইএইএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের হাতে ৬০ শতাংশ মাত্রার ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত আছে। এটি পরমাণু অস্ত্রের জন্য দরকারি ৯০ শতাংশের কাছাকাছি।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরপরই যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির আইএইএ বোর্ড অব গভর্নরসকে ইরান অস্ত্র বিস্তার রোধের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করলো কি-না তা পর্যালোচনার জন্য চাপ দেওয়ার কথা ভাবছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের ধারণা, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নিলে কয়েকমাসের মধ্যে তারা একটি পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারবে।
ইরান যদিও শুরু থেকে বলে আসছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। গতকাল শনিবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমে আইএইএর রিপোর্টকে ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ), যা সংক্ষেপে ইরান পরমাণু চুক্তি নামে পরিচিত। এতে ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য স্বাক্ষর করেছিল। তবে ওই চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। এখন তিনি নতুন চুক্তি চাইছেন।
টিএইচ