
শ্রমিক অসন্তোষের কারণে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত মধ্যপাড়া পাথরখনিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাতে খনির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানীয়া ট্রেড কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) ও জার্মানিয়া করপোরেশন লিমিটেড (জিসিএল) এক বিজ্ঞপ্তিতে খনির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে। ফলে আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল থেকে পাথর খনিতে সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
খনি শ্রমিকদের সাথে চলমান অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল পাথরখনি পার্বতীপুরের মধ্যপাড়া পাথরখনির সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি ও জিসিএল।
মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী ডি এম জোবায়েদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কতিপয় শ্রমিকের অন্যায় ও অযৌক্তিক দাবি তুলে জোরপূর্বক অন্য সাধারণ শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বাধা দিচ্ছেন। ভূ-গর্ভে ও খনির অভ্যন্তরে অবৈধ ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছেন তারা। এতে খনিতে কর্মরত বিদেশি বিশেষজ্ঞরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
খনির যন্ত্রপাতি ও স্থাপনার ক্ষতির আশঙ্কাও করছেন তারা। পরিস্থিতি শান্ত করতে প্রশাসনিক পর্যায়ে চেষ্টা চালানো হলেও শ্রমিকদের একটি অংশ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মানতে অস্বীকৃতি জানায়। সেই সাথে তারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও নাশকতার আশঙ্কা সৃষ্টি করছেন। তাই খনি কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।
এমন পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ খনিতে উৎপাদন কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে।
বন্ধ থাকাকালে বিধি অনুযায়ী কোনো শ্রমিক-কর্মচারীরা বেতন, ভাতা বা অন্যান্য সুবিধা পাবেন না। তবে জরুরি দাপ্তরিক কার্যক্রম ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা শ্রমিক-কর্মচারীদের নির্ধারিত ডিউটি রোস্টার অনুযায়ী সময়মতো কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
খনির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি ও জিসিএলের দাবি, এক বছর ধরে বাইরের স্বার্থান্বেষী একটি গোষ্ঠীর মদদে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী একদল শ্রমিক কয়েকবার দাবি আদায়ের নামে খনির ভেতর অবস্থান ধর্মঘট করে উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। এদের মধ্যে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া শফিকুল, রফিকুল, হাসান, ওমর আলী এবং সবুজ, সিরাজুল, মিঠু বাবু, নবিউল, মামুন, রমেন দুলাল রয়েছেন।
বেশ কয়েকবার তারা শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে অযৌক্তি দাবি আদায়ের নামের কাজে যোগদান থেকে বিরত থেকে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, তাদের প্রোডাকশন প্রফিট বোনাস দেওয়ার দাবিটি অযৌক্তিক। কারণ যারা এই খনিতে কাজ করছেন, তারা সবাই অস্থায়ী ভিত্তিতে। পাথর খনির উন্নয়ন ও উৎপাদনে দুই শতাধিক বিদেশি খনি বিশেষজ্ঞ, দেশি প্রকৌশলী, প্রায় ৮০০ দক্ষ শ্রমিক এবং দুই শতাধিক কর্মকর্তা নিয়ে তিন শিফটে কাজ শুরু করে জিটিসি। এরপর থেকে খনিটি পাঁচবার লাভের মুখ দেখতে পায়, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
টিএইচ