ঢাকা,

২২ জুন ২০২৫


জাপানে বিনা খরচে কর্মসংস্থানের সুযোগ

বিজনেস আই ডেস্ক

প্রকাশিত হয়েছে: ১৮:০১, ২১ জুন ২০২৫

জাপানে বিনা খরচে কর্মসংস্থানের সুযোগ

ফাইল ছবি

বিশ্বের অন্যতম ধনী রাষ্ট্র জাপান বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বড় সুযোগের দুয়ার খুলেছে। আগামী পাঁচ বছরে দেশটি বাংলাদেশ থেকে এক লাখ দক্ষ কর্মী নেবে, তাও পুরোপুরি বিনা খরচে। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি টোকিওতে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে দুই দেশের মধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এ সফরে সিদ্ধান্ত হয়, জাপান নিজেরাই ভাষা ও দক্ষতা প্রশিক্ষণ দেবে এবং প্রশিক্ষণ শেষে উপযুক্তদের নির্বাচন করে জাপানে নিয়ে যাবে। প্রশিক্ষণ চলবে নরসিংদীর মনোহরদীতে অবস্থিত টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে (টিটিসি), যেখানে জাপানি প্রশিক্ষকরাই কাজ করবেন।

সমঝোতা অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে কাইকম ড্রিম স্ট্রিট (কেডিএস), জাপানের ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস (এনবিসিসি) এবং বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান জেবিবিআরএ’র (জাপান বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সি) সঙ্গে বিএমইটি চুক্তি করে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো যৌথভাবে প্রশিক্ষণ ও নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে।

প্রশিক্ষণ শেষে প্রার্থীদের ‘স্পেসিফায়েড স্কিল ওয়ার্কার’ (এসএসডব্লিউ) টেস্টে উত্তীর্ণ হতে হবে। কেবল উত্তীর্ণরাই জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন, এবং তারা যাবেন সম্পূর্ণ বিনা খরচে।

বিএমইটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আশরাফ হোসেন বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য এক বিশাল চ্যালেঞ্জ হলেও আমরা আশাবাদী। প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন, আমরা এক লাখ দক্ষ কর্মী তৈরি করতেই হবে।’

প্রাথমিকভাবে শুধু নরসিংদী টিটিসিতে প্রশিক্ষণ শুরু হলেও ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য টিটিসিগুলোতেও এই কার্যক্রম চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

জাপানে যাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরেই মূল বাধা ছিল ভাষা ও পেশাগত দক্ষতার অভাব। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, জাপান অত্যন্ত মাননির্ভর শ্রমবাজার হওয়ায় সেখানে অদক্ষ শ্রমিকের কোনো জায়গা নেই।

ওকাপ চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলাম বলেন, “ভাষার শিক্ষায় কোয়ালিটি নিশ্চিত করা জরুরি। ভাষার দুর্বলতা থাকলে পরীক্ষা পাস করা সম্ভব নয়, ফলে কোটা পূরণে বাধা আসবে।”

বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মাত্র ৫ হাজার ১৪ জন বাংলাদেশি জাপানে গেছেন। তবে রেমিট্যান্স প্রবাহ তুলনামূলকভাবে ভালো। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাপান থেকে বাংলাদেশে এসেছে প্রায় ৬৫ মিলিয়ন ডলার।

টোকিওতে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ সেমিনার অন হিউম্যান রিসোর্সেস’ অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘জাপানে বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজের পাশাপাশি একটি নতুন জীবনধারার দ্বারও উন্মোচিত হচ্ছে। এটি শুধু কর্মসংস্থান নয়, বরং বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি বিশাল সম্ভাবনার সূচনা।’

ইউ

News