ঢাকা,

১৫ জুন ২০২৫


কেরানীগঞ্জে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি এলাকাবাসীর

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১৩:০০, ১৪ জুন ২০২৫

কেরানীগঞ্জে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি এলাকাবাসীর

ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন মাদারীপুর এলাকায় দিন দিন বেড়েই চলেছে মাদকের অবাধ ব্যবসা। মাদারীপুর জামে মসজিদের পশ্চিম পাশের রাস্তা ও আশপাশের এলাকায় সংঘবদ্ধ একটি চক্র প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে চরম উৎকণ্ঠা ও নিরাপত্তাহীনতা।

অভিযোগ অনুযায়ী, পিলার নম্বর বরিশুর ২৩ ও ২৪ এবং ব্রাহ্মণকিত্তা ১ ও ২ নম্বর এলাকার আশেপাশে প্রতিদিন মাদক কেনাবেচা হচ্ছে। এতে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছেন স্থানীয়ভাবে পরিচিত একাধিক ব্যক্তি। তাদের মধ্যে অন্যতম শামসুদ্দিনের ছেলে আলম, যিনি ব্রাহ্মণকিত্তা ১ পিলারের পাশে বসবাস করেন। আরও জড়িত রয়েছেন খোয়েজনগরের রবিন (সালাউদ্দিনের ছেলে), ড্রাইভারের ছেলে মাহবুব, পটকাজোরের হাকিমের ছেলে অপু এবং সোলায়মান, যিনি মাদারীপুরের জুম্মনের ভাই হিসেবে পরিচিত।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন অসংখ্য মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী এই এলাকায় এসে জড়ো হয়। পাশাপাশি, মাদারীপুর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন পরিত্যক্ত এক বাড়ি—যা আগে মফিজ সাহেবের মালিকানায় ছিল এবং বর্তমানে টুনু সাহেবের ছেলে গাফফার দখল করে রেখেছে—সেই স্থানে মাদক ব্যবসার পরিকল্পনা ও টাকার ভাগ-বাটোয়ারা হয় বলে দাবি করেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা সেলিম রেজা বলেন, “এই এলাকায় মাদক সমস্যা এখন মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন যদি এখনই পদক্ষেপ না নেয়, তবে ভবিষ্যতে এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।”

স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “শুধু মাদক না, এর ফলে এলাকায় চুরি, দস্যুতা, ছিনতাই বেড়ে গেছে। আমরা কেউই নিরাপদ নই। দিনের পর দিন এই অবস্থা চললেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়ছে না।”

অপর এক গণ্যমান্য ব্যক্তি আবু বকর বলেন, “আমরা একাধিকবার স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ নিয়েছি, কিন্তু মাদক চক্র এতটাই শক্তিশালী যে কেউ প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। এখন একমাত্র ভরসা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ।”

এ প্রসঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রাইসুল ইসলাম বলেন,“এই এলাকাটি একসময় শান্তিপূর্ণ ছিল। এখন সন্ধ্যার পর রাস্তায় বের হওয়াটাও আতঙ্কের বিষয়। প্রতিদিন নতুন মুখ, মাদকসেবী, অপরাধীদের আনাগোনা। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।”

অভিযোগে নাম উল্লেখ থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের একাধিক চেষ্টা করা হলেও তাদের কাউকেই ফোনে পাওয়া যায়নি।

এদিকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হব।

টিএইচ

News