
ফাইল ছবি
বাংলাদেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা কমিয়ে আনতে বহুল প্রতীক্ষিত একটি বৈঠক হতে যাচ্ছে লন্ডনে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন। বৈঠকটি দেশের নির্বাচন ও রাজনৈতিক সমঝোতার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে একটি সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র বলছে, এই উচ্চপর্যায়ের সাক্ষাৎ বাস্তবায়নে শেষ মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনিই চূড়ান্তভাবে এই উদ্যোগে সবুজ সংকেত দেন।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ঈদের আগের দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে। তবে বিএনপি এ সময়সীমাকে ‘পর্যাপ্ত নয়’ বলে প্রতিক্রিয়া জানায়। দলটির দাবি, নির্বাচন হতে হবে রমজানের আগেই—২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে। ফলে লন্ডনের বৈঠকে ভোটের সময় নির্ধারণের বিষয়টিই মূল আলোচ্য হতে পারে।
এছাড়া আলোচনায় উঠে আসতে পারে—
* অন্তর্বর্তী সরকারের কাঠামো ও দায়বদ্ধতা
* জুলাই সনদ” বাস্তবায়ন
* বিচারিক সংস্কার ও ক্ষমতার ভারসাম্য
* নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিবেশের উন্নয়ন
তারেক রহমানের এই সাক্ষাৎ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে সম্প্রতি বিস্তর আলোচনা হয়েছে। কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা একজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব, আর তারেক রহমান দেশের সবচেয়ে বড় বিরোধী দলের ফাংশনাল প্রধান। এই বৈঠকটি না হলে রাজনৈতিক শিষ্টাচার ভঙ্গ হতো এবং সমালোচকদের হাতে সুযোগ থাকত।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই মিটিংটা হলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে এবং অনেক কিছু সহজ হয়ে যেতে পারে, নতুন ডাইমেনশন সৃষ্টি হতে পারে।’
এই সাক্ষাৎ নিয়ে শুধু বিএনপিই নয়, অন্য দলগুলোতেও আগ্রহ তৈরি হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি দল প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচন ঘোষণাকে ইতিবাচকভাবে দেখলেও মনে করছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আমরা আশা করি, নির্বাচনের আগে সংস্কার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে তাঁরা গঠনমূলক আলোচনা করবেন।’
এই সময়ের মধ্যে রাজনীতিতে উত্তেজনা অনেকটা বেড়ে গেছে। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানো, নয়াপল্টনে বিক্ষোভ, এনসিপির সঙ্গে দ্বন্দ্বসহ সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও কঠিন করে তোলে।
এমন পরিস্থিতিতে ইউনূস-তারেক বৈঠক অনেক কিছুর মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। সংশ্লিষ্ট এক সূত্র বলেছে, দুই পক্ষ চাইলে এই বৈঠকের মাধ্যমেই নির্বাচনের সময়, কাঠামো ও বোঝাপড়ার রূপরেখা ঠিক হতে পারে।
ইউ