ঢাকা,

০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫


গোয়ালন্দে মাজারে হামলার ঘটনায় মসজিদের ইমামসহ গ্রেপ্তার ১৮

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১০:১৩, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গোয়ালন্দে মাজারে হামলার ঘটনায় মসজিদের ইমামসহ গ্রেপ্তার ১৮

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপসহ বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নেপাল সরকার।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা থেকে কার্যকর হওয়া এ সিদ্ধান্তে এক ডজনের বেশি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। নেপাল সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ফলে রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে তরুণসমাজের নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু হয়। এ সময় পুলিশের প্রাণঘাতী বল প্রয়োগে ১৯ জন নিহত ও তিন শতাধিক আহত  হয়েছেন বলে বিভিন্ন পক্ষ নিশ্চিত করেছে।

এদিকে শিক্ষার্থী-জনতার বিক্ষোভে উত্তাল নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির পদত্যাগ এবং আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে দেশটির বিরোধী দল রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত পার্টি (আরএসপি)। সোমবার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছেন আরএসপির সাধারণ সম্পাদক কবীন্দ্র বুরলাকোতি।

হিমালয়ান টাইমস জানিয়েছে, দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৪৭ জন আহত ব্যক্তি ভর্তি হয়েছেন। এতে রক্তের চাহিদা বেড়েছে।

রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় কারফিউ অব্যাহত রয়েছে। এরই মাঝে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগ করেছেন। তবে নেপালে চলমান জেন-জি নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ নৈরাজ্যবাদী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির হাতে চলে গেছে বলে দাবি করেছেন দেশটির সরকারের মুখপাত্র, যোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তিমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং। এই শক্তি দেশের ক্ষমতাসীন সরকারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

নতুন বানেশ্বরের সিভিল সার্ভিস হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক মোহনচন্দ্র রেগমি জানিয়েছেন, সেখানে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে মহাঙ্কালার ট্রমা সেন্টারের প্রধান মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট ডা. বদ্রি রিজাল জানান, দুজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।

প্রতিবাদী যাত্রার সময় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় প্রশাসন কাঠমাণ্ডুর বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ জারি করে। কিছু বিক্ষোভকারী সংসদ ভবনে ঢুকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। রেগমির দেওয়া তথ্যে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে একজনের বয়স আনুমানিক ৩৫ থেকে ৪০ বছর এবং অন্যজনের বয়স প্রায় ২০ থেকে ২৫ বছর।

ডা. রিজাল জানান, এখানে ৩০ জনের বেশি আহতকে আনা হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এর আগে সিভিল সার্ভিস হাসপাতালের মেডিক্যাল ডিরেক্টর দীপক পাওডেল জানান, শুধু তাঁদের হাসপাতালে ১০০ জনের বেশি আহতকে আনা হয়। বেশির ভাগের শরীরে রাবার বুলেটের আঘাত রয়েছে। আহতের সংখ্যা এত বেশি যে সিভিল হাসপাতাল অনেক রোগীকে অন্যত্র পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের বেশির ভাগকে সিভিল হাসপাতাল ও বীর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সাইনামঙ্গলস্থিত কাঠমাণ্ডু মেডিক্যাল কলেজ টিচিং হাসপাতালে অনেককে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।

কাঠমাণ্ডু উপত্যকা পুলিশ কার্যালয়ের মুখপাত্র শেখর খানাল এ বিষয়ে জানান, ‘কতজন আহত হয়েছে তা এখনো হিসাব করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী ও বিক্ষোভকারী উভয় পক্ষেই অনেকে আহত হয়েছে।’

সরকার কর্তৃক কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবেশাধিকার বন্ধ এবং রাজনৈতিক দুর্নীতির প্রতিবাদে মূলত ‘জেন-জ’ নামে পরিচিত তরুণ প্রজন্ম রাস্তায় নামে। সংঘর্ষের পর সংসদ ভবনের চারপাশসহ বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবেশাধিকার বন্ধের বিষয়ে মানবাধিকার ও গণমাধ্যম সংগঠনগুলো এ পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে। তাদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী কে. পি. শর্মা অলি সরকারের এই সিদ্ধান্ত মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দিচ্ছে এবং ব্যবসার ক্ষতি করছে।

সরকার জানিয়েছে, মোট ২৬টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপ, যার মধ্যে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্স, রেডিট, লিংকডইন, পিন্টারেস্ট ও সিগন্যাল রয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী নিবন্ধন না করায় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এক প্রতিবেদনে কাঠমাণ্ডু পোস্ট জানিয়েছে, পুলিশ বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের জন্য আগে থেকেই ব্যারিকেড তৈরি করেছিল। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা এগিয়ে যায়। এর ফলে জলকামান এবং টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করা হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা গাছের ডাল এবং পানির বোতল ছুড়ে মারে, সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দেয় এবং কেউ কেউ পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে।

এদিকে গতকাল বিকেল ৩টায় কাঠমাণ্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে অনুশীলন ছিল বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবলারদের। কিন্তু জেন-জিদের বিক্ষোভের কারণে হোটেল থেকেই বের হতে পারেননি তাঁরা। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক দেখে অনুশীলন স্থগিত করেছে বাফুফে।

সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

 

টিএইচ

News