
পরিবার, রাষ্ট্র এবং ব্যক্তিজীবনসহ সর্বত্র নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সহিংসতামুক্ত নারীর জীবন গড়তে ‘নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও)’র ২ ও ১৬ (১) (গ) ধারার ওপর বিরাজমান সংরক্ষণ সম্পূর্ণরূপে তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে নারীপক্ষ।
রবিবার এক বিবৃতিতে নারীপক্ষ এ দাবি জানিয়েছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও)’র দুটি ধারায় গত প্রায় একচল্লিশ বছর ধরে চলে আসা সংরক্ষণ বহাল রেখেই ৯ বছর পর বাংলাদেশ থেকে এবার সিডওর ৯ম ও ১০ম পর্যায়ক্রমিক প্রতিবেদন একসঙ্গে একটি প্রতিবেদন হিসেবে চূড়ান্ত করেছে নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য দূর করে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘে সিডও সনদ গৃহীত হয়। ১৯৮০ সালের ১ মার্চ বিভিন্ন দেশ সনদটিতে স্বাক্ষর করতে শুরু করে। ১৯৮১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে এ সনদ কার্যকর হয়।
বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর সিডও সনদে অনুস্বাক্ষর করে। শুরুতে সনদের ২, ১৩ (ক), ১৬ (১) (গ) ও (চ) ধারার ওপর সংরক্ষণ রেখেছিল বাংলাদেশ। পরে ২ ও ১৬ (১) (গ) ধারার ওপর সংরক্ষণ বহাল রেখে বাকি দুটি থেকে তুলে নেয়। সনদের ২ নম্বর ধারায় বলা আছে, নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য নিরসনে শরিক দেশগুলো আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে এবং আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে। ১৬.১ (গ) ধারায় বিয়ে ও বিয়ে বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও দায়িত্বের কথা বলা হয়েছে।
সিডও’র এই দু’টি ধারা থেকে সংরক্ষণ প্রত্যাহার না হওয়ায় নারীর পারিবারিক, ব্যক্তিগত ও বিয়ে সংক্রান্ত অধিকার প্রতিষ্ঠা কেবল কথার কথাই থেকে যাচ্ছে। নারীর উপর নির্যাতন ও সহিংসতাও কমছে না। আমাদের প্রশ্ন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া একটি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সংঘটিত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকা সত্ত্বেও কেন তারা নারীর প্রতি বৈষম্যের মূল বীজ লুকিয়ে থাকা এই দু’টি ধারার উপর সংরক্ষণ তুলে নিতে পারেছে না?
টিএইচ