
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢলের আট বছর পূর্ণ হলো আজ। দীর্ঘ এ সময়েও একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার। আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিক দায়িত্ব পালন করলেও এখন অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকার ও স্থানীয়রা।
জাতিসংঘ ও সরকারের সমন্বিত তথ্যে জানা গেছে, বর্তমানে কক্সবাজারসহ বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি। আরও ২৫ থেকে ৩০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্তের ওপারে অপেক্ষমাণ, যারা সুযোগ পেলেই বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে। এর সঙ্গে ক্যাম্পে প্রতিবছর জন্ম নিচ্ছে আরও প্রায় ৩০ হাজার শিশু।
এমন পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের আইনশৃঙ্খলা ও পরিবেশ ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে খুনোখুনি, ভারী অস্ত্র সংগ্রহ ও মাদক চোরাচালানে সম্পৃক্ততার অভিযোগ বাড়ছে। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও ক্ষোভ বাড়ছে দিনদিন।
এদিকে আন্তর্জাতিক সহায়তাও ধীরে ধীরে কমছে। ফলে আর্থিক সংকটে পড়েছে এনজিও পরিচালিত কার্যক্রম। প্রায় ৬ হাজার ৪০০ অনানুষ্ঠানিক স্কুলে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে বা সময় কমিয়ে আনা হয়েছে। এতে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শিশুর শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
চীনের মধ্যস্থতায় ২০২২ সালের জানুয়ারিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগ নেয়া হয়। বাংলাদেশ থেকে পাঠানো আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা থেকে পাইলট প্রকল্পে ১১৪০ জনকে চিহ্নিত করা হয়। তবে মিয়ানমার সম্মতি দিয়েছিল মাত্র ৭১১ জনের ক্ষেত্রে; বাকি ৪২৯ জনকে নিতে আপত্তি জানায় তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রত্যাবাসন কার্যকর হয়নি।
কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, “আট বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার। উল্টো নতুন করে অনুপ্রবেশ হচ্ছে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের অপরাধে জড়িত হওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে।”
টিএইচ