ঢাকা,

১৩ জুলাই ২০২৫


পদ্মা সেতুর টোলপ্লাজায় বিক্ষোভ, ৪০ মিনিট যান চলাচল বন্ধ

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ২২:৪৫, ১২ জুলাই ২০২৫

পদ্মা সেতুর টোলপ্লাজায় বিক্ষোভ, ৪০ মিনিট যান চলাচল বন্ধ

ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় চাঁদা দাবি এবং শরীয়তপুরের বাস চলাচলে বাধা, শ্রমিকদের ওপর হামলা ও বাস ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে শরীয়তপুরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোলপ্লাজার সামনে এই কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় যুব শক্তি ও শরীয়তপুরের সর্বস্তরের জনগণ। 

এই কর্মসূচির কারণে ৪০ মিনিট টোলপ্লাজায় যান চলাচল বন্ধ থাকে এবং ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে প্রায় ১ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড, গোসাইরহাটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, যাত্রাবাড়ীতে বাস ভাঙচুর, এসবের মাধ্যমে রাজনীতির ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি, দখলদারি, হামলা ও খুনের রাজত্ব চলছে।

জনগণের ঘাড়ে এই অন্যায় চাপিয়ে দিতে দেওয়া হবে না।

বিক্ষোভে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শরীয়তপুর জেলার আহ্বায়ক ইমরান নাজির বলেন, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস আর ছাত্র-শ্রমিকদের ওপর দমননীতি দেশের রাজনীতিকে কলঙ্কিত করছে। যাত্রাবাড়ীতে পরিবহন জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। শরীয়তপুরের মানুষকে জিম্মি করে রাখার এই অপপ্রয়াসের আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

সেই সঙ্গে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে মাঝির ঘাট এলাকা ভাঙনের শিকার হয়েছে। অবিলম্বে প্রশাসনের উচিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে বাস চলাচল স্বাভাবিক করা।

শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের অভিযোগ, যাত্রাবাড়ীর এক নেতা দীর্ঘদিন ধরে বাসচালক ও মালিকদের কাছ থেকে প্রতি মাসে চাঁদা আদায় করে আসছেন। সম্প্রতি তিনি এককালীন ৫০ লাখ টাকা চাঁদা এবং অতিরিক্ত ১০টি বাসের জায়গা দাবি করেন।

মালিকপক্ষ অস্বীকৃতি জানালে গত ৯ জুলাই থেকে যাত্রাবাড়ীতে শরীয়তপুরের বাস চলাচলে বাধা দেওয়া হয়। ৯ জুলাই ধোলাইপাড় এলাকায় একটি বাস ভাঙচুর, ১০ জুলাই ভোরে গোমতি ফিলিং স্টেশনের সামনে আরো দুইটি বাসে হামলা এবং ১১ জুলাই এক শ্রমিককে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত ১০টি বাস ভাঙচুর ও ১২ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে মালিক ও শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন।

শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের চালক নয়ন বেপারী বলেন, আজ সকালেও পাঁচ-সাতজন এসে আমাকে মেরেছে। বলেছে চাঁদা না দিলে এই রুটে বাস চালাতে পারব না।আমি এর বিচার চাই।

জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চৌকিদার বলেন, ‘ফাহিম নামের এক ব্যক্তি গত বছর ৫ আগস্টের পর যাত্রাবাড়ীতে কাউন্টার দখল করে নেন। এরপর থেকেই চাঁদাবাজি শুরু। এখন পাঁচ কোটি টাকা দাবি করছেন!  শ্রমিকদের মারধর করছেন। ২০ লাখ মানুষ আজ ভোগান্তিতে।’

পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে আন্ত জেলা যাত্রীসেবা দিচ্ছি। ২০০টি গাড়ির মধ্যে ১৭০টি সক্রিয়। অন্য রুটে যেতে পারি না। চাহিদা না মানায় ফাহিম আমাদের শ্রমিকদের মারছেন, গাড়ি ভাঙছেন। আমরা ন্যায়বিচার চাই।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে মুশফিকুর রহমান ফাহিম মুঠোফোনে বলেন, ‘আমাদের দুটি পরিবহন আছে। শরীয়তপুরের বাসগুলো আমাদের পরিবহনকে বাধা দিচ্ছে। উল্টো আমাকে চাঁদাবাজ বলা হচ্ছে। সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি চাঁদা চেয়েছি যদি এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আমি নিজে আইনের সঠিক প্রয়োগ চাই আমার বিরুদ্ধে।’

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। যেহেতু ঘটনাস্থল ঢাকায়, তাই ডিএমপির সঙ্গে সমন্বয় করেছি। যাত্রীদের যেন হয়রানির শিকার হতে না হয়, সে জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।

 

টিএইচ

News