ঢাকা,

০২ মে ২০২৫


মিনিকেট চালের দাম কমেছে

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ২০:২১, ১ মে ২০২৫

মিনিকেট চালের দাম কমেছে

ফাইল ছবি

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মিনিকেট চালের দাম কিছুটা কমেছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে মোটা ও সরু নাজিরশাইল চালের দাম আগের মতোই রয়েছে। একইভাবে, পেঁয়াজ ও মুরগির দাম এখনও উচ্চ পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। 

বাজারে দেখা গেছে, বর্তমানে খুচরা দোকানে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর, রশিদ প্রভৃতি ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ২ থেকে ৫ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে মঞ্জুর ও সাগর ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল, যা এখন ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডায়মন্ড ব্র্যান্ডের মিনিকেটের দাম ৮৮ টাকা থেকে কমে ৮৫ টাকা এবং রশিদ ব্র্যান্ডের মিনিকেটের দাম ৭৮ টাকা থেকে কমে ৭৬ টাকা হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি কমেছে মোজাম্মেল মিনিকেট চালের দাম। এই চালের দাম এত দিন সবচেয়ে বেশি ছিল। গত সপ্তাহেও খুচরায় মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ১০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন সেটি ৯২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, অর্থাৎ কেজিতে ৮ টাকা কমেছে।

তবে নাজিরশাইল, ব্রি-২৮, ব্রি-২৯ ও স্বর্ণা চালের দাম আগের মতোই রয়েছে। বর্তমানে মানভেদে প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল ৮০ থেকে ৯৫ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৬০ টাকা এবং স্বর্ণা চাল ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের খুচরা চাল বিক্রেতা তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন বোরো ধানের মৌসুম চলছে। বোরো ধান থেকে যে চাল হয়, সেটি বাজারে এসেছে। সাধারণত মিনিকেট হিসেবে পরিচিত ছাঁটাই করা চালগুলো এ ধান থেকেই আসে। ফলে বাজারে নতুন মিনিকেট চালের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও কমেছে।’

বাজারে বর্তমানে দেশি পেঁয়াজের দাম তিন সপ্তাহ ধরে বাড়তি রয়েছে। ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। পাড়া-মহল্লায় এই দাম আরও একটু বেশি। গত এক মাসের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে। আমদানি করা পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি এবং ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ২৬০ থেকে ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা ও সোনালির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। এছাড়া, ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম আগের মতোই বেশি রয়েছে। বর্তমানে এক ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়।

মাছ-মাংসের দাম বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আগের মতোই রয়েছে। এখন প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় এবং খাসির মাংস ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, চাষের কই মাছ ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙাশ ২০০ থেকে ২৮০ টাকা, রুই ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা এবং পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে বেশিরভাগ সবজির দাম প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে রয়েছে। তবে কিছু সবজির দাম ১০০ টাকার বেশি। যেমন, করলা, বরবটি, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, পটোল, লতি, ঢ্যাঁড়স ও পেঁপে ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শজনে ও কাঁকরোলের কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। আলুর দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার বাসিন্দা মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘বেশ কিছু দিন ধরে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে চাল কিনে খেয়েছি। এখন চালের দাম কিছুটা কমেছে। আরও কমা উচিত। আর শীতের পরে সবজির দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। এটিও আমাদের ভোগাচ্ছে।’

মোট কথা, যদিও মিনিকেট চালের দাম কিছুটা কমেছে, তবে বাজারের অন্যান্য পণ্য যেমন পেঁয়াজ, মুরগি, এবং কিছু সবজির দাম এখনও উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে, যা ভোক্তাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইউ

News