
ছবি সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধবিষয়ক চুক্তি (এনপিটি) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য সংসদে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে ইরান। শুক্রবার (১৪ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ি।
বাকায়ি বলেন, “ইরান সংসদে এনপিটি ত্যাগের বিষয়টি বিবেচনায় নিচ্ছে। তবে আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিচ্ছি—ইরানের গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরির কোনো ইচ্ছা বা পরিকল্পনা নেই।”
১৯৬৮ সালে স্বাক্ষরিত এবং ১৯৭০ সালে কার্যকর হওয়া এনপিটি চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্বের মাত্র পাঁচটি দেশ—যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স—সামরিক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক অস্ত্র রাখার অধিকার রাখে। বাকি সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে শুধু শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়, যা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।
ইরানের সম্ভাব্য এ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করেছে। কারণ চুক্তি ত্যাগের মাধ্যমে দেশটি তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধান এড়িয়ে যেতে পারবে। এতে করে মধ্যপ্রাচ্যে পারমাণবিক উত্তেজনা নতুন করে চাঙা হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এনপিটি থেকে বেরিয়ে গেলে ইরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) এবং পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠবে।
এর আগে, ২০১৫ সালে ইরান ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি (জেসিপিওএ) স্বাক্ষর করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া ও জার্মানির সঙ্গে। এই চুক্তি অনুযায়ী, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক অবরোধ শিথিল করে।
তবে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে, তেহরানও ধাপে ধাপে চুক্তি থেকে সরে আসতে শুরু করে।
ইরানের এই সাম্প্রতিক পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কূটনৈতিক মহল।
ইউ