শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি অনির্দিষ্টকালের জন্য দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দর্শনার্থীর সঙ্গে অসদাচরণ এবং মারধরের ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হলে পরবর্তীতে সেখানে হামলার ঘটনা ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নেয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।

বুধবার (১১ জুন) সকালে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান। তিনি জানান, “অনিবার্য কারণবশত রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি আপাতত দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ থাকবে। পুরো বিষয়টি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সরাসরি নজরদারিতে রয়েছে।”

ঘটনার সূত্রপাত ঈদের পরদিন। শাহনেওয়াজ নামে এক দর্শনার্থী তার স্ত্রী ও ভাতিজাকে সঙ্গে নিয়ে কাছারিবাড়ি ঘুরতে আসেন। তিনি প্রবেশ মূল্য দিয়ে টিকেট সংগ্রহ করেন, তবে মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের জন্য টাকা নেওয়া হলেও কোনো টোকেন দেওয়া হয়নি। পরে কাছারিবাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মূল ফটকে দায়িত্বে থাকা কর্মচারী তার কাছে টিকিট দেখতে চাইলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ অনুযায়ী, পরে কাস্টোডিয়ানসহ অন্য কর্মচারীরা শাহনেওয়াজকে অফিসের ভেতর নিয়ে গিয়ে আটকে রাখেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। খবর পেয়ে তার পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় বিএনপি নেতারা এসে তাকে উদ্ধার করেন। সেই রাতেই শাহজাদপুর থানায় তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

তবে ঘটনার দুই দিন পার হয়ে গেলেও পুলিশ কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১০ জুন) ‘শাহজাদপুরের সর্বস্তরের জনতা’র ব্যানারে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে উত্তেজিত জনতা রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি অডিটোরিয়ামে হামলা চালায়। তারা দরজা, জানালা, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।

ঘটনার পর শাহজাদপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মুশফিকুর রহমান কাছারিবাড়িতে গিয়ে পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বর্তমানে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির পরিবেশ থমথমে, তবে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।