ঢাকা,

৩১ জুলাই ২০২৫


জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা বৃদ্ধি ও সরাসরি নির্বাচনের দাবি মহিলা পরিষদের

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ২০:২৪, ৩০ জুলাই ২০২৫

জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা বৃদ্ধি ও সরাসরি নির্বাচনের দাবি মহিলা পরিষদের

জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা বৃদ্ধি ও সরাসরি নির্বাচনের দাবিতে   বাংলাদেশ  মহিলা পরিষদ আজ বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে,   গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে যে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সংসদে নারী আসন বিষয়ে আলোচনায় গত ১৪ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত  সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যমতে আসতে পারেনি।  

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এই বিষয়ে গভীর বিস্ময় প্রকাশ করছে। এছাড়াও আমরা আরও বিষ্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি সংসদে নারী আসন বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের এই আলোচনায় রাজনৈতিক দলের নারী প্রতিনিধিত্ব, আর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের নারী কমিশনের প্রতিনিধিত্ব এবং দেশের নারী সংগঠনের  প্রতিনিধিত্ব  অনুপস্থিত।

আমরা ইতোপূর্বে সংবাদ সম্মেলনে  দেয়া কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যানের বক্তব্যে আমরা দেখেছিলাম যে, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলো সংসদে ১০০টি সংরক্ষিত নারী আসনের পক্ষে একমত হয়েছেন যদিও নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা হয়নি।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মনে করে জাতীয় সংসদে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ নারী সদস্যের উপস্থিতি নারী সমাজের স্বার্থ ও মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখবে এবং জনগণের কাছে তাদের দায়বদ্ধতা তৈরি করবে। অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা যায় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের বিধান থাকায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যথাযথ নারী প্রতিনিধিত্ব হয় না। সাধারণত নারী আসনে যারা মনোনিত হয়ে সংসদে গিয়েছেন তারা তাদের যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারেননি এবং যথযথ মর্যাদাও দায়িত্ব পাননি। নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকা না থাকায় এবং জনগনের ভোটে সরাসরি নির্বাচিত না হওয়ায় জনগন ও নারী প্রতিনিধিদের কাছে দায়বদ্ধতা ছিল না। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোও দলীয় স্বার্থে তাদেরকে ব্যাবহার করেছেন। স্থানীয় সরকারের সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের বিধানটি স্থানীয় সরকারে বহুদিন থেকে কার্যকর হয়ে আসছে। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হোক। যার মাধ্যমে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের পথ প্রশস্ত হবে বলে আমরা মনে করি। এই পদ্ধতি ২/৩ টার্মের জন্য বহাল রাখা যেতে পারে। আমরা আশা করি, যে সকল রাজনৈতিক দল সমূহ এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করছেন তারা এ বিষটির গুরুত্ব ও যৌক্তিকতা অনুধাবন করে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিবেন।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে নারীর রাজনৈতিক ক্ষতায়নের লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে যে আন্দোলন করে আসছে সেখানে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা এক- তৃতীয়াংশ  বৃদ্ধি এবং জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। যাতে করে  সংরক্ষিত নারী আসনের নারী প্রতিনিধিগণ মনোনয়নের মাধ্যমে নয়, জনগণের  সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে সমান অধিকার, সম-মর্যাদা এবং দায়িত্বের সঙ্গে ফলপ্রসূ এবং কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। বিশেষত, নারী ইস্যুতে সরকারের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে নারীর স্বার্থে দৃশ্যমান প্রভাব রাখতে পারবেন। এছাড়াও সরাসরি নির্বাচনের এই ব্যবস্থা নারী প্রার্থীদের নির্বাচনী এলাকা গড়ে তুলবে এবং স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা গণতান্ত্রিক চর্চাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণকে আরও বিস্তৃত ও অর্থবহ করে তুলবে।

এ  ক্ষেত্রে মহিলা পরিষদের সুস্পষ্ট দাবি-
১.  জাতীয় সংসদের সাধারণ আসনে নারী- পুরুষ উভয়ই নির্বাচন করতে পারবে।
২.  জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন থাকবে।
৩.  সংরক্ষিত নারী  আসন সংখ্যা ন্যুনতম এক তৃতীয়াংশে উন্নীত করতে হবে।
৪.  সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের প্রথা বাতিল করতে হবে।
৫.  একটি সুনির্দিষ্টি নির্বাচনী এলাকা থেকে সংরক্ষিত নারী আসনে জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. এই ব্যবস্থাটি ২/৩ টার্মের জন্য থাকবে।

টিএইচ

News